প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনের আগে পাকিস্তান ১৩১ পৃষ্ঠার একটি দলিল প্রকাশ করেছে, যাতে ভারতের বিরুদ্ধে ‘নৃশংসতা, যুদ্ধাপরাধ, বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড, নির্বিচারে গ্রেফতার এবং নির্যাতনের’ পাশাপাশি জম্মু-কাশ্মীরে নারীদের ধর্ষণ ও শ্লীলতাহানির অভিযোগ আনা হয়েছে।
ডেকান হেরাল্ডের ওই প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের সরকার জম্মু-কাশ্মীর মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিষয়ে শুধু ভারত সরকার তার সশস্ত্র বাহিনীর বিরুদ্ধে অভিযোগের পুনরাবৃত্তি করেনি, বরং অভিযোগ করেছে যে, গুলমার্গ, রায়পুর, যোধপুর, চক্রতার অনুপগড় এবং বিকানের ক্যাম্পে ইসলামিক স্টেট সন্ত্রাসীদের প্রশিক্ষণ দিচ্ছে নয়াদিল্লি।
ইসলামাবাদ থেকে প্রকাশিত এই দলিলের এখনও আনুষ্ঠানিকভাবে প্রতিক্রিয়া জানায়নি নয়াদিল্লি।
নয়াদিল্লির একটি সূত্র অবশ্য দলিলটিকে ভারতের বিরুদ্ধে পাকিস্তানের ভিত্তিহীন প্রচারণার আরেকটি উদাহরণ ছাড়া ‘কিছু নয়’ বলে উড়িয়ে দিয়েছে।
ভারতে আইএস সন্ত্রাসীদের প্রশিক্ষণ দেওয়ার ব্যাপারে মোদি সরকারের বিরুদ্ধে পাকিস্তানের নতুন অভিযোগকে ‘অদ্ভুত ও বিদ্বেষপূর্ণ’ বলেও মন্তব্য করেছে ওই সূত্রটি।
ইমরান খানের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা মইদ ইউসুফ, পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী শাহ মাহমুদ কুরেশি এবং মানবাধিকার মন্ত্রী শিরীন মাজারি ইসলামাবাদে একটি সংবাদ সম্মেলন করে দলিলটি প্রকাশ করেন।
ইউসুফ বলেন, জম্মু-কাশ্মীরে ভারতের ‘নৃশংসতার’ দলিলে পাকিস্তানের পক্ষ থেকে সৈয়দ আলী শাহ গিলানির প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়েছে, যিনি কয়েক দশক ধরে জম্মু ও কাশ্মীরে ভারতের বিরুদ্ধে ‘বিচ্ছিন্নতাবাদী’ আন্দোলনের নেতৃত্ব দেওয়ার পর ১ সেপ্টেম্বর শ্রীনগরে মৃত্যুবরণ করেন।
পাক পররাষ্ট্রমন্ত্রী শাহ মাহমুদ কুরেশি বলেন, দলিলে বেশিরভাগ তথ্য আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা এবং গণমাধ্যমের প্রকাশিত নথি থেকে নেওয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, পাকিস্তান আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সঙ্গে দলিলটি শেয়ার করবে, যাতে ভারতকে বিশেষ করে জম্মু-কাশ্মীরে ‘নৃশংসতা এবং মানবাধিকার লঙ্ঘন’ থেকে বিরত রাখা যায়।
‘আমরা আশা করি, মানবাধিকার লঙ্ঘনের স্বাধীন তদন্তের জন্য জাতিসংঘ মানবাধিকার কাউন্সিলের স্পেশাল প্রসিডিউর ম্যানডেটধারীদের প্রবেশে অনুমতি দিতে ভারত সরকারকে বাধ্য করবে জাতিসংঘ’।
পাকিস্তান ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী আগামী ২৪ ও ২৫ সেপ্টেম্বর নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে ভাষণ দেবেন বলে আশা করা হচ্ছে।
পাকিস্তান প্রকাশিত এই দলিলে ভারতের নিরাপত্তা বাহিনীর এক হাজার ১৭৮ কর্মকর্তা ও কর্মীর বিরুদ্ধে অভিযোগ করা হয়েছে যে, তারা জম্মু ও কাশ্মীরে ‘যুদ্ধাপরাধের’ মতো তিন হাজার ৪৩২টি ঘটনা ঘটিয়েছেন।
নয়াদিল্লির আরেকটি সূত্র ডেকান হেরাল্ডকে জানিয়েছে, আইএসকে সমর্থন করার ক্ষেত্রে মোদি সরকারের ভূমিকা সম্পর্কে ইসলামাবাদের নতুন অভিযোগের উদ্দেশ্য হলো—যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার সঙ্গে ভারতের সম্পর্ককে তিক্ততা সৃষ্টি করা।