• শনিবার, ০২ নভেম্বর ২০২৪, ০৮:৫৩ অপরাহ্ন
শিরোনাম
সংখ্যালঘু ইস্যুতে কেন্দ্র করে এক ভয়ঙ্কর ষড়যন্ত্র পাকানো হচ্ছে শেখ হাসিনা বাকশালকে নতুন আঙ্গিকে করেছিলেন: যুগ্ম মহাসচিব রিজভী ‘হিন্দুর বন্ধু’ বলছেন ইউনূস-বিএনপি-জামায়াতকে, মোদির ভূমিকায় ক্ষুব্ধ ‘বাংলাদেশের মোহন ভাগবত’ ১৯৭২ সালের সংবিধান সংস্কার প্রক্রিয়ায় আস্থা প্রকাশ ড. কামাল হোসেনের আমাদের সম্পর্কে চ্যালেঞ্জ হবে না, কমলা বা ট্রাম্প যেই জয়ী হোক  : শফিকুল আলম অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন জাতীয় পার্টির কার্যালয়ের সামনে  একদিনেই ১০ জনের মৃত্যু, হাসপাতালে ভর্তি ৯৬৬ ডেঙ্গুতে সারাদেশে গাজা এবং লেবাননে জবাব দেয়ার প্রতিশ্রুতি ইরানের বায়ুবিদ্যুৎ প্রকল্প চীনে চালু হলো বিশ্বের সবচেয়ে উঁচু  তাকলিমাকান মরুভূমির যে ভাবে জন্ম হয়েছিল 

মাগুরা শ্রীপুর এর ঐতিহ্য বাহি শ্রীপুরের পাল দের ব্যবসা ধ্বংসের মুখে

 মোঃ জুয়েল রানা মাগুরা প্রতিনিধি / ৪২৬ Time View
Update : বুধবার, ১৫ সেপ্টেম্বর, ২০২১

কুমার বাড়ির সেই চাকা আজ আর তেমন করে ঘোরে না। ওরা নিজেরাই এখন সমস্যার ঘূর্ণিপাকে। আগের মত এখন আর জ্বলে না কুমারদের জ্বালানি ঘর। ওরা এখন নিজেরাই জ্বলছে নানাবিধ সমস্যায়। যুগের পরিবর্তন হয়েছে, পরিবর্তন হয়নি মৃৎশিল্পের।মাটির কলসি কাঁখে গাঁয়ের বধূকেও আর নদীর ঘাটে দেখা যায় না। মাটির তৈরী জিনিসের ব্যবহারও কমেছে। মাগুরার শ্রীপুর উপজেলার কুমারদের তৈরী মৃৎশিল্প বহুমুখী সমস্যায় ধীরে ধীরে তার ঐতিহ্য হারাচ্ছে। স্বাধীনতার প্রায় ৫০ বছরে দেশের অনেক কিছুর পরিবর্তন হলেও পরিবর্তন হয়নি মৃৎ শিল্পের সাথে সংশ্লিষ্টদের। প্রয়োজনীয় অর্থভাব ও জায়গা সংকটের কারনে দিনে দিনে হারিয়ে যাচ্ছে এ শিল্প। কুমার পরিবার গুলোর নেই কোন আধুনিক মেশিন ও সরঞ্জাম। কুমার সম্প্রদায় হাঁড়ি-পাতিল ও কলসি সহ মৃৎ শিল্প তৈরীতে এঁটেল মাটি, জ্বালানী কাঠ, শুকনো ঘাস ও খড় প্রধান উপকরণ হিসেবে ব্যবহার করে। কিন্তু দূর-দুরান্তের মাঠ থেকে মাটি সংগ্রহ করতে গুণতে হয় প্রচুর অর্থ। পেশাকে ধরে রাখতে বিভিন্ন সমস্যার মাঝে ও অনেকেই দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে মাটির তৈরী জিনিসপত্র সংগ্রহ করে বিক্রি করছে তারা। ফলে অর্জিত হচ্ছে না কাঙ্খিত অর্থ। বিজ্ঞানের উৎকর্যতায়, প্রযুক্তির উন্নয়ন ও নতুন নতুন শিল্পসামগ্রীর প্রসারের কারনে প্রয়োজনীয় পৃষ্ঠপোষকতা এবং অনুকূল বাজারের অভাবে এ শিল্পটি এখন বিলুপ্তির পথে। কোনোমতে বেঁচে থাকার জন্য দিনের ১৮ ঘণ্টা হাড়ভাঙা পরিশ্রম করে এ শিল্পের সঙ্গে জড়িতরা।দুঃখ-কষ্টের মাঝে দিন কাটলেও মৃৎশিল্পীরা স্বপ্ন দেখেন, একদিন আবার কদর বাড়বে মাটির পণ্যের। সেদিন হয়তো আবারও তাদের পরিবারে ফিরে আসবে সুখ ও শান্তি। এ শিল্পের সাথে জড়িত অনেকেই বাপ-দাদার এ পেশা ছেড়ে অন্য পেশায় জড়িয়ে পড়ছে। উপজেলায় পালপাড়া নাম ধারণ করে মৃৎশিল্পের সাথে জড়িয়ে ছিল কিছু হিন্দু পরিবার। তারা এলাকায় কুমার বা পাল নামেও অধিক পরিচিত। অভাব অনটনের মাঝে ও হাতে গোনা কয়েক জন বাপ-দাদার পেশা আকড়ে ধরে আছে। তাদের অবস্থা অনেকেরই শোচনীয়। তারা মাসজুড়ে হাঁড়ি-পাতিল, সরা, লোটা, কলস, ঝাঁঝর, ফুলের টবসহ বিভিন্ন ধরনের মাটির সামগ্রী তৈরি করে। রোদে শুকানোর পর আগুনে পুড়িয়ে সেগুলো বিভিন্ন হাট-বাজারে বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করে। কিন্তু বর্তমানে এ্যালুমিনিয়াম, প্লাস্টিক ও স্টিলের জিনিসপত্রের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে না পেরে মৃৎশিল্পটি বিলুপ্তির মুখে পড়েছে। শত অভাবের মধ্যেও এ সম্প্রদায়ের অনেকেই এখনো পূর্বপুরুষের এ পেশাকে আঁকড়ে ধরে আছেন। এ শিল্পের সঙ্গে জড়িত নেপাল কুমার পাল বলেন, জ্বালানী কাঠ, মাটি, শ্রমিকের মজুরি, রং, পোড়ানো ও পরিবহনসহ প্রতিটি কাজ করতেই টাকার প্রয়োজন হয়। ফলে এ পেশা সঙ্কুচিত হয়ে যাচ্ছে দিনের পর দিন। এ পেশার উৎকর্ষতা ধরে রাখার জন্য সরকার যে ঋণ চালু রেখেছে তার সুফল এ পেশার সঙ্গে জড়িতরা পাচ্ছেন না। উপজেলার নোহাটা গ্রামের উজ্জল বলেন, বাজারে এখন আর আগের মতো মাটির জিনিসপত্রের চাহিদা নেই। এর স্থান দখল করেছে দস্তা, এ্যালুমিনিয়াম ও প্লাস্টিকের তৈজসপত্র। ফলে বিক্রেতারা মাটির জিনিসপত্র আগের মতো আগ্রহের সঙ্গে নিচ্ছেন না। এখন শুধুমাত্র মাটির চাড় ও দইয়ের পাতিল ছাড়া অন্য কিছু তৈরী করি না। রোববার সরেজমিন উপজেলার পালপাড়া গিয়ে দেখা যায়, অনেকেই ব্যস্ত হাঁড়ি-পাতিল, কলস, চাড়ি, চাড় ও দইয়ের পাতিল সহ মাটির তৈরী বিভিন্ন পণ্য তৈরীতে। উপানন্দ পাল বলেন, ‘সুখ-দুঃখ, সুবিধা-অসুবিধার কথা শুনে যান অনেকেই। কিন্তু কেউ কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করে না। এখন আর আগের মত মাটির পণ্যের চাহিদা নেই। এখন অবস্থা অনেকেরই শোচনীয়। সরকার থেকে স্বল্পশর্তে ঋণ পেলে তাঁরা হয়তোবা এ পেশা চালিয়ে যেতে পারবেন বলে তিনি দাবি করেন। উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা ওয়াসিম আকরাম বলেন, সমাজসেবা অফিসের সহজ শর্তে ঋণ প্রদান কার্যক্রম আপাতত বন্ধ রয়েছে। করোনাকালিন সময়ে সরকারি অনুদান প্রদানের জন্য তাদের একটা তালিকা তৈরী করা হয়েছে। অনুদান পাওয়া মাত্রই তাদের মাঝে প্রদান করা হবে।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category

ফেসবুকে আমরা