পেজটিতে দেখা যায়, ছাতক থানায় হেফাজতে পদচ্যুত নেতা মামুনুল হকের অনুসারীদের হামলার পর আসামি গ্রেপ্তারের জন্য গত (৯-এপ্রিল) ছাতকের গণেশপুর গ্রামে অভিযানে যায় ছাতক থানা পুলিশ। যাত্রা পথের শুরু থেকেই সেই দৃশ্য লাইভ প্রচার করা হয় কথিত সেই নিউজ চ্যানেল থেকে। লাইভ চলাকালে ক্যামেরার দিকে তাকিয়ে পুলিশ সদস্যদের বিভিন্ন অঙ্গভঙ্গি প্রকাশ করতেও দেখা যায়। যা দেখে আসামিরা নিরাপদ স্থানে পালিয়ে গিয়েছিল বলে স্থানীয়রা মন্তব্য করেন।
এছাড়া ছাতক থানার বিভিন্ন পুলিশ সদস্যদের পক্ষ থেকে ঈদ শুভেচ্ছা সম্বলিত পোস্টারও প্রচার করা হতো এই পেজ থেকে। লাইভ প্রচারিত ভিডিও প্রতিবেদকের কাছে সংরক্ষিত আছে।
এদিকে, নানা সমালোচনার পর এখনো পেজটি আছে বহাল তবিয়তে। গতকালও স্থানীয় একটি হা-ডু-ডু খেলার ম্যাচ নিয়ে তিনবার লাইভ করা হয়েছে। শুক্রবারও লাইভ হয়েছে সেই পেজ থেকে। ভিডিও বিভাগে খুঁজে পুলিশের অনেক প্রেস ব্রিফিং এবং অর্জনের লাইভের দেখা মিলেছে সেখানে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ফয়ছল আহমেদ নামের একজন ব্যবসায়ী বছর দেড় আগে খোলেন এই পেজটি। ছাতকের বিভিন্ন ইস্যুতে টাকার বিনিময়ে বিজ্ঞাপনসহ লাইভ করেন তারা। শনিবার প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত পেজটিকে লাইকের সংখ্যা ছিল ১৮ হাজার ৪৩৬টি, আর অনুসারী ৪৪ হাজার ৯৫৫ জন।
মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করার পর ফয়ছলের বড় ভাই পরিচয়ে একজন বলেন, তিনি লাইভে আছেন, অনেক ব্যস্ত। ফ্রি হয়ে কথা বলবেন। ভিডিও’র বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, বিষয়টি নিয়ে তদন্ত চলছে, এখন কিছু বলা যাবে না।
প্রতিবেদকের কাছে ফয়ছলের একটি ভিজিটিং কার্ড রয়েছে। সেখানে আছে তিনি একাধারে জাতীয় গণমুক্তি পত্রিকার ফটো সাংবাদিক, ছাতক অনলাইন প্রেসক্লাবের সহসভাপতি, ছাতক টু সুনামগঞ্জ ফেসবুক অনলাইন টিভি চ্যানেলের চেয়ারম্যান, একতা স্যাটেলাইট কেবল নেটওয়ার্ক ও সাইফ এন্টারপ্রাইজের স্বত্ত্বাধিকারী এবং বঙ্গবন্ধু তথ্য প্রযুক্তি লীগ, সুনামগঞ্জ জেলার সাধারণ সম্পাদক।
বিষয়টি পুলিশ সদর দপ্তরের নজরে এসেছে জানিয়ে সহকারী পুলিশ মহাপরিদর্শক (এআইজি) মিডিয়া কামরুজ্জামান রাসেল জানান, তদন্ত শেষে প্রতিবেদন দেখে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
সুনামগঞ্জের পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান জানান, এ ঘটনায় দুই সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে জেলা পুলিশ। তারা এরই মধ্যে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে।
এ ছাড়া ঘটনায় জড়িতদের দ্রুত খুঁজে বের করার কথা জানিয়েছেন সিলেট রেঞ্জের উপ-পুলিশ মহাপরিদর্শক (ডিআইজি) মফিজ উদ্দিন।