• মঙ্গলবার, ২৫ মার্চ ২০২৫, ১০:৩০ অপরাহ্ন
শিরোনাম
চট্টগ্রাম লালখান বাজার টাংকি পাহাড়ে আগুন ইন্দোনেশিয়ার আগ্নেয়গিরি যেখানে আগুন নীল! কাওয়া আইজেনের অবিশ্বাস্য রহস্য এপ্রিলেই ৩১ লাখের বেশি শিক্ষার্থী স্কুল ফিডিংয়ের আওতায় আসছে : প্রাথমিক বিদ্যালয় মার্কিন স্টেট ডিপার্টমেন্টে নিয়মিত বাংলাদেশ প্রসঙ্গ, যা বললেন ট্যামি ব্রুস উপত্যকায় ভয়াবহ হামলায় মৃত্যুর আগে আল-জাজিরার সাংবাদিকের আবেগঘন বার্তা : ইসরায়েলি  বিশ্বজুড়ে নতুন বার্ড ফ্লু থেকে নতুন মহামারীর সম্ভাবনা, বিজ্ঞানীদের সতর্কবার্তা মানবিক সহায়তা হ্রাসের ফলে আরো শিশু মারা যেতে পারে : জাতিসংঘ দক্ষিণ দ্বীপে ৬.৭ মাত্রার ভূমিকম্প : নিউজিল্যান্ডের  আমিই গোল করব, আর্জেন্টিনাকে হারাব ; রাফিনিয়ার হুঙ্কার ভারতকে হারাতে চান জামাল ভূঁইয়ারা : এএফসি এশিয়ান কাপ

হাতিরঝিলের ওয়াটার ট্যাক্সি: আশার বাহনে নিরাশা

Reporter Name / ৪৬৪ Time View
Update : সোমবার, ২৭ সেপ্টেম্বর, ২০২১

► অফিস সময়ে যাত্রী থাকলেও দিনভর ফাঁকা
► যাত্রী কম থাকায় সব ট্যাক্সি চলে না
► চারপাশের পরিবেশ ঠিক করার প্রতি জোর দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা

রাজধানীর বুক ভেদ করা নৌপথ হাতিরঝিল। ২০১৬ সাল থেকে সেই পথে চলছে ওয়াটার ট্যাক্সি। এই নৌযানে আস্থাও রয়েছে নগরবাসীর। সড়কপথের বিরক্তিকর যানজট ভুলতে অনেকেই হাতিরঝিলে চলা ওয়াটার ট্যাক্সিতে ওঠে। তবে নানা কারণে সম্ভাবনাময় ওয়াটার ট্যাক্সির যাত্রী আগের চেয়ে কমেছে অনেক। এ জন্য করোনা মহামারিতে সার্ভিস বন্ধ থাকার পাশাপাশি সময়মতো ট্যাক্সি না ছাড়া এবং পরিবেশকে দায়ী করছে কেউ কেউ।

যাত্রীদের অভিযোগ, সড়কের যানজট থেকে বাঁচতে অনেক দূর হেঁটে ওয়াটার ট্যাক্সি ঘাটে গিয়ে দীর্ঘ সময় বসে থাকতে হয়। এ জন্য অনেকে আসে না। আবার ট্যাক্সি চলা শুরু করলে পানির ঢেউয়ের সঙ্গে চারপাশের দুর্গন্ধে নিঃশ্বাস নেওয়া যায় না। এমন পরিস্থিতিতে ওয়াটার ট্যাক্সিতে চড়ে গন্তব্যে যাওয়া কঠিন। তবে অনেকে বিপদে পড়েও উঠছে।

তবে ঘাটসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, ঘাট যদি কারওয়ান বাজারের পাশে (সোনারগাঁও হোটেল) হতো তবে কয়েক গুণ যাত্রী বাড়ত। যাত্রী কম থাকার কারণে নির্দিষ্ট সময়ে ছেড়ে যাওয়া যায় না ট্যাক্সি। আর দুর্গন্ধের বিষয়টি নিয়ে অনেক কাজ করা হলেও পরিবর্তন হচ্ছে না।

বিচ্ছিন্ন পরিকল্পনার কারণে সম্ভাবনাময় হাতিরঝিল ওয়াটার ট্যাক্সির যাত্রী কমছে উল্লেখ করে নগর বিশেষজ্ঞ ড. আদিল মোহাম্মদ খান বলেন, ‘হাতিরঝিলের ওয়াটার ট্যাক্সি অন্য ওয়াটার ট্যাক্সি সার্ভিসের চেয়ে বেশি যাত্রী আকৃষ্ট করতে পেরেছিল। করোনা পরিস্থিতি এবং দুর্গন্ধযুক্ত পানির কারণে যাত্রীর সংখ্যা কমছে। এ ধরনের ওয়াটার ট্যাক্সি বিশ্বের অনেক দেশে নগর ট্রান্সপোর্টে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। আমাদের বিচ্ছিন্ন পরিকল্পনার কারণে এসব সমস্যা হয়।’

সরেজমিনে কারওয়ান বাজার (এফডিসি) ঘাটে গিয়ে দেখা যায়, দুপুর দেড়টার দিকে যাত্রীর একেবারেই চাপ নেই। অনেকক্ষণ পর পর একটা ট্যাক্সি ছেড়ে যাচ্ছে তো আরেকটি ঘাটে ভিড়ছে। গুলশান (গুদারাঘাট) থেকে এফডিসি ঘাটে আসা যাত্রীদের কেউ কেউ ময়লা পানির বিড়ম্বনার কথা জানাচ্ছিল সংশ্লিষ্ট অফিসে। রামপুরা থেকে আসা কামরুল ইসলাম নামের এক যাত্রী বলেন, ‘সময় বাঁচাতে এবং একটু ঠাণ্ডা বাতাসের জন্য ট্যাক্সিতে উঠি, কিন্তু চলা শুরু করলে নাক বন্ধ করে রাখতে হয়। এভাবে চলতে থাকলে যাত্রী দিন দিন কমে যাবে।’ অন্য এক যাত্রী বলেন, সময় বাঁচানোর জন্য এই পথে এলেও অনেকক্ষণ বসে থাকতে হয়। দেরিতে ট্যাক্সি ছাড়ে। তাই সময় নষ্ট হয়।

তবে সময় ও পরিবেশ নিয়ে যাত্রীদের অভিযোগ থাকলেও ট্যাক্সি ছাড়লে কম সময়ে গন্তব্যে পৌঁছানোর প্রশংসা করলেন কয়েকজন যাত্রী। গুদারাঘাট থেকে এফডিসি ঘাটে পৌঁছানো যাত্রী সাবরিনা রাহা নামের এক বেসরকারি চাকরিজীবী বলেন, ‘ট্যাক্সির জন্য অপেক্ষা করা লাগে ঠিক, কিন্তু ছাড়লে কম সময়ে চলে আসা যায়। আমি মাত্র ২০ মিনিটে এই (এফডিসি) ঘাটে চলে এলাম।’

বোট মাস্টার বিধান মজুমদার বলেন, ‘যাত্রীরা ট্যাক্সিতে উঠে বিরক্ত হলেও কিছু করার থাকে না। পানি তো আর আমরা ময়লা করি না। আর যাত্রী না উঠলে একেবারে খালি টেক্সি তো ছাড়া যায় না। সকাল-বিকেল অফিসের সময় এই সমস্যা হয় না। তখন অনেক যাত্রী থাকে।’

জানা যায়, বর্তমানে ১৫টি ছোট-বড় ট্যাক্সি হাতিরঝিলে এই সার্ভিস দিচ্ছে। বড় ট্যাক্সি রয়েছে তিনটি। আর ছোট ১২টি। এসব ট্যাক্সিতে আকারভেদে ৩৬ থেকে ৬০ জনের আসন রয়েছে। এফডিসি বা কারওয়ান বাজার মোড় থেকে গুলশান-বাড্ডা লিংক রোড হয়ে গুদারাঘাট যেতে ভাড়া নেওয়া হচ্ছে ৩০ টাকা। এফডিসি বা কারওয়ান বাজার মোড় থেকে মেরুল বাড্ডা পর্যন্ত ভাড়া ২৫ টাকা। সকাল সাড়ে ৬টা থেকে রাত সাড়ে ১০টা পর্যন্ত বিভিন্ন শিফটে ভাগ করে বিরতিহীনভাবে সেবা দিচ্ছেন ওয়াটার ট্যাক্সির কর্মীরা।

সুবিধাভোগীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বাড্ডা, গুলশান, রামপুরা, খিলগাঁওসহ নগরীর পূর্বাংশের মানুষ কারওয়ান বাজার, মগবাজার, দিলু রোড, ইস্কাটন, বাংলামোটর, তেজগাঁও এলাকায় সহজে যাতায়াত করতে পারছে। হাতিরঝিল ওয়াটার ট্যাক্সি সার্ভিসের দায়িত্বে রয়েছে করীম গ্রুপ। এসব বিষয়ে গ্রুপটির সিনিয়র অ্যাডমিন অফিসার মাসুম জামান বলেন, ‘যাত্রীর চাপ সব সময় ছিল। তবে বর্তমানে করোনা মহামারিতে বন্ধ থাকার পর যাত্রী কমেছে। আশা করছি, স্কুল-কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় পুরোদমে খুললে যাত্রী আরো বাড়বে।’

এ ব্যাপারে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) চেয়ারম্যান এ বি এম আমিন উল্লাহ নুরী বলেন, ‘ওয়াটার ট্যাক্সি সার্ভিস রাজধানীবাসীর জন্য আশীর্বাদ। অনেক মানুষ যানজট এড়িয়ে নিজের গন্তব্যে যেতে পারছে। যাত্রী কম এটা ঠিক না। যাত্রী আগের মতোই আছে। এই সেবাকে আরো উন্নত কিভাবে করা যায়, সে বিষয়ে ভাবা হচ্ছে।’


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category

ফেসবুকে আমরা