স্টাফ রিপোর্টার ॥
শিক্ষার গুণগত মান ও সাফল্যের ধারাবাহিকতায় এগিয়ে চলছে উত্তর সমস সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। বর্তমানে সরকারি নির্দেশনা ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে পাঠদান চলছে। করোনা প্রতিরোধে গেটে ও প্রতিটি ক্লাসরুমে যথাযথ ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। ছাত্রছাত্রী ও শিক্ষক সকলে মাস্ক পরিধান করে স্কুলে আসেন। জানা গেছে, উত্তর সমস সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি ১৯৬৮ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। বর্তমানে ছাত্রছাত্রীর সংখ্যা ৩২৮। শিক্ষকের সংখ্যা ৮ জন। বিদ্যালয়টিতে এলাকার বিভিন্ন গ্রামের শিক্ষার্থীরা পড়ালেখা করে। এ বিদ্যালয়ের অবস্থান সুন্দরগঞ্জ উপজেলার ধর্মপুর ইউনিয়নে। ২০১৯ সালে সমাপনী পরীক্ষায় ১০ জন এ প্লাসসহ শতভাগ শিক্ষার্থী পাশ করেছে। এছাড়া খেলাধুলা, বিভিন্ন প্রতিযোগিতায়ও এ বিদ্যালয়ের সাফল্য রয়েছে। সরেজমিন দেখা গেছে, প্রতিষ্ঠানে স্বতঃস্ফূর্তভাবে শিক্ষার্থীরা স্বাস্থ্যবিধি মেনে স্কুলে প্রবেশ করছে। গেটেই ছাত্র ও শিক্ষক সবাইকে তাপমাত্রা মাপা হচ্ছে, হ্যান্ড স্যানেটাইজার দেওয়া হচ্ছে প্রত্যেকের হাতে হাতে এবং হাত ধোয়ার ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। ছাত্রছাত্রী ও শিক্ষক সবাই মাস্ক পড়ে ক্লাসে এসেছেন। দুরত্ব বজায় রেখে বেঞ্চ সাজানো হয়েছে। শ্রেণিকক্ষে প্রতিটি বেঞ্চে দুইজন করে বসেছে। তাদের পরনে স্কুলপোশাক ও বেঞ্চে ব্যাগ। তাদের চেহারায় ছিল খুশির ঝিলিক ও প্রাণচাঞ্চল্য দেখা গেছে। দীর্ঘ দেড় বছর পর ক্লাসে ফিরতে পেরে শিক্ষার্থীরা উচ্ছসিত বলে জানান কয়েকজন শিক্ষার্থী। তারা জানান, স্কুলে আসতে পেরে খুবই ভাল লাগছে। বাড়িতে বসে থাকতে থাকতে হাপিয়ে উঠেছিলাম। আগের মত স্কুলে আসতে পেরে খুবই উৎফুল¬ লাগছে। এভাবে নিয়ম মেনে ক্লাস না হলে তাদের ক্ষতি কিছুটা হলেও পুষিয়ে নেওয়া যাবে বলে মন্তব্য করে কয়েকজন শিক্ষার্থী। তবে ক্লাসে ফেরার আনন্দ কেবল শিক্ষার্থীদেরই নয়, সমানভাবে উচ্ছ্বসিত শিক্ষকরাও। দীর্ঘ সময়ের করোনা মহামারিতে নিম্নমুখী হওয়া শিক্ষা ব্যবস্থার মধ্যে আবারও শিক্ষার্থীদের মধ্যে ফিরতে পারার ভিন্ন অনুভূতির কথা জানিয়েছেন শিক্ষকরাও। শিক্ষকরা বলছেন, মহামারি পরিস্থিতিতে দীর্ঘ সময় পর শিক্ষার্থীদের মধ্যে ফিরছেন তারা। ক্লাসে ফেরার মধ্য দিয়ে শিক্ষার্থীদের একঘেয়েমিতা, হতাশা আস্তে আস্তে কেটে যাচ্ছে। বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি আবুল কালাম বলেন, ‘স্কুলটা উপজেলার মধ্যে ভালো। প্রধান শিক্ষক স্কুলের জন্য খুব আন্তরিক। সব স্যার খুব দায়িত্বশীল। তাঁরা শুধু স্কুলেই পড়ান না। বাড়িঘরে গিয়েও খোঁজ নেন।’ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মামুন অর রশীদ যোগদানের পর থেকে বিদ্যালয়ের পড়ালেখার মান বৃদ্ধি পেয়েছে। বিদ্যালয়টির প্রধান শিক্ষক মামুন অর রশীদ বলেন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ায় প্রধানমন্ত্রী ও শিক্ষামন্ত্রীর প্রতি কৃতজ্ঞতা। আমাদের বিদ্যালয়ে সরকারি সকল সরকারি নির্দেশনা ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে পাঠদান করানো হচ্ছে। স্বাস্থ্যবিধি মানতে সকল ধরনের ব্যবস্থা রেখেছি। মাস্ক বাধ্যতামুলক ও দুরত্ব বজায় রেখে শিক্ষা কার্যক্রম চলছে। আমি দোয়া করি মহান আল্লাহ তায়ালা যাতে আমাদের সকলকে সুস্থ ও করোনা থেকে মুক্ত রাখেন। তবে তিনি অভিভাবকদেরকে তাদের সন্তানরা কেউ অসুস্থ হলে স্কুল কর্তৃপক্ষকে জানানোর অনুরোধ জানান। তিনি বলেন, ‘ক্লাশের পাঠদান পদ্ধতি পরিবর্তন, শিক্ষকদের পরিশ্রম, সাপ্তাহিক পরীক্ষা, দুর্বল শিক্ষার্থীদের জন্য আলাদা ক্লাস ব্যবস্থা, অভিভাবক সমাবেশের কারণে স্কুলটি ভালো ফলাফল করছে।