শুক্রবার সরেজমিন দক্ষিণ এশিয়ার সর্ব বৃহৎ শপিংমল যমুনা ফিউচার পার্ক ঘুরে দেখা গেছে ফ্যাশনসচেতন ক্রেতাদের ভিড়। বিত্তবানদের পাশাপাশি মধ্যম আয়ের মানুষও এসব দোকানে ঢুঁ মারছেন। এখানে বিভিন্ন ব্র্যান্ডের শোরুমে দেশি-বিদেশি ডিজাইনের পশমি পোশাক কিনতে তরুণ-তরুণীদের ভিড় করতে দেখা গেছে। বাবা-মার হাত ধরে শিশুরাও আসছে তাদের পছন্দসই শীতের পোশাকটি কিনতে। পোশাকের দাম নাগালের মধ্যে রয়েছে বলে জানিয়েছেন দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আসা ক্রেতারা। বিক্রেতারা বলছেন, ভালো মানের ও ডিজাইনের পোশাক আনা হয়েছে শীত ঘিরে। মলের বিভিন্ন দোকানে নির্দিষ্ট ও বিভিন্ন মডেলের পোশাকে ১০ থেকে ২৫ শতাংশ ছাড় চলছে।
শপিংমলের বিভিন্ন ব্র্যান্ডের শোরুম ঘুরে ও বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বাহারি ডিজাইনের সোয়েটার ও ব্লেজার বিক্রি হচ্ছে দুুই হাজার থেকে ১৫ হাজার টাকা। ছেলে ও মেয়েদের জ্যাকেট পাওয়া যাচ্ছে এক হাজার ২০০ থেকে ১৫ হাজার টাকা। শীতের শাল এক হাজার ৫০০ থেকে চার হাজার টাকা, ট্রাউজার ৫৫০ থেকে এক হাজার টাকা, কানটুপি ২৫০ থেকে ৮০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এ ছাড়া বাচ্চাদের কাপড়ের জুতা বিক্রি হচ্ছে ৫০০ থেকে এক হাজার টাকা, চীন-থাইল্যান্ডসহ বিভিন্ন দেশ থেকে আমদানি করা মাফলার ১০০০ থেকে ৩০০০ টাকায় পাওয়া যাচ্ছে। এই শপিংমলে ধানমন্ডি-১৫ থেকে আসা হাসিনা বেগম যুগান্তরকে বলেন, এখানে একই ছাদের নিচে দেশি-বিদেশি বিভিন্ন ব্র্যান্ডের শীতবস্ত্র পাওয়া যাচ্ছে। মান ও ডিজাইনের দিক চিন্তা করেই এখানে কেনাকাটা করতে আসছি।
রাজধানীর গুলিস্তান, বায়তুল মোকাররম, মতিঝিল, ফার্মগেট, বঙ্গবাজার, নিউমার্কেট, ফার্মগেটের ফুটপাতে হকাররা স্লোগান দিয়ে বিক্রি শুরু করছেন শীতের কাপড়। নিু আয়ের মানুষের জন্য সোয়েটার, ব্লেজার, টুপি, কাপড়ের জুতা, কেটস, জ্যাকেট, ট্রাউজার, প্যান্ট, হাত ও পা-মোজা, মাফলার, চাদর ও কম্বলসহ নানা ধরনের গরম পোশাক সেখানে চোখে পড়বে। গুলিস্তান ফুটপাতের শীতবস্ত্র বিক্রেতা সেলিম যুগান্তরকে বলেন, সব বয়সি মানুষের পোশাক বিক্রি হচ্ছে। শীত এখনো পুরোপুরি আসেনি, তাই ক্রেতার সংখ্যা কম। তবে বিক্রি শুরু হয়েছে। চাকরিজীবী ইকরামুল জানান, আমাদের মতো সাধারণ আয়ের মানুষের জন্য এখানে শীতের সব কিছুই পাওয়া যাচ্ছে। দামেও সস্তা। তবে দরদাম করেই পোশাক কিনতে হয়। কারণ এখানে কম দামে পোশাক পাওয়া গেলেও প্রথমে বিক্রেতারা বেশি দাম হাঁকান।
ফুটপাতের বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, চায়নার বিভিন্ন ধরনের শাল ও চাদরের দাম ২৫০ থেকে ৩০০ টাকা, শীতের শাল ৪০০-৬০০ টাকা, সোয়েটার ১০০-৫০০ টাকা, কাপড়ের জুতা ১৫০-৩০০ টাকা, জ্যাকেট ২০০-৪০০’ টাকা, ট্রাউজার ১৫০-৫০০ টাকা, গরম কাপড়ের তৈরি প্যান্ট ১৫০-৪০০ টাকা, হাইগলা টি-শার্ট ১২০-২৫০ টাকা, টুপিওয়ালা টি-শার্ট ২৫০-৬০০ টাকা ও মাফলার পাওয়া যাচ্ছে ৪০-২০০ টাকা। এ ছাড়া হাতমোজা জোড়া ৫০ থেকে ২০০ টাকা, কানটুপি ছোটদের জন্য ৪০ টাকা এবং বড়দের জন্য ৬০ থেকে ১০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
সরেজমিন রাজধানীর নিউমার্কেট, চাঁদনীচক, ইস্টার্ন মল্লিকা, ধানমন্ডি হকার্স মার্কেট, বঙ্গ মার্কেটের বিভিন্ন দোকান ঘুরে দেখা গেছে-জ্যাকেট, সোয়েটার, হুডি, শাল, ব্লেজার, চাদর, কাশ্মিরি শাল, হরেকরকম ফুলহাতা গেঞ্জিসহ বিভিন্ন শীতের পোশাক পাওয়া যাচ্ছে। শিশু ও তরুণীদের জন্য রয়েছে হাল ফ্যাশনের শীতের কাপড়। নিউ মার্কেটের মায়ের দোয়া ফ্যাশন হাউজের মালিক জুবায়ের আল হাসান যুগান্তরকে বলেন, কয়েক দিন থেকে শীতের পোশাক ভালো বিক্রি হচ্ছে। ক্রেতাদের চাহিদা অনুযায়ী নানা ধরনের শীতের পোশাক এনেছেন এখানকার ব্যবসায়ীরা। জাহিদ বলেন, রাজধানীতে শীত পড়তে শুরু করেছে। তাই আগেভাগে গরম কাপড় কিনতে এসেছি। তবে গত বছরের চেয়ে এ বছর দাম একটু বেশি মনে হচ্ছে।