• বুধবার, ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১১:২৬ পূর্বাহ্ন

প্রকল্প পাসে পার্সেন্টেজ নেন ওয়াবদুল কাদের, সেই কথাই জানালেন সিলেট গোলাপগঞ্জের মেয়র রাবেল

অনলাইন ডেস্ক / ৪১৯ Time View
Update : শনিবার, ২৭ নভেম্বর, ২০২১

সাবেক যুবলীগ নেতা আমিনুল ইসলাম রাবেল। বর্তমানে সিলেট গোলাপগঞ্জ পৌরসভার টানা দু’বারের মেয়র। স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবেই বিজয় লাভ করেছেন যুক্তরাজ্য প্রবাসী রাবেল।

সম্প্রতি যুক্তরাজ্যে সফররত অবস্থায় এক বোমা ফাটিয়েছেন ক্ষমতাসীন দল আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক ্এবং সড়ক পরিবহন ্ও সেতুমন্ত্রী ্ওয়াবদুল কাদেরের বিরুদ্ধে। সেই মন্তব্য নিয়ে চলছে তোলপাড়। সেই সাথে রয়েছে আলোচনা সমালোচনা। গত বুধবার রাতে লন্ডনে গ্রেটার সিলেট ডেলেপমেন্ট কাউন্সিল আয়োজিত এক মতবিনিময় সভায় বলেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ছাড়াও প্রকল্প পাস করাতে পার্সেন্টেজ দিতে হয়। সভায় তিনি র্আও বলেন, “বাংলাদেশে যে ইলেকশনগুলো হচ্ছে, সেখানে আমি নৌকার বিরুদ্ধে দু’বারই পাস করেছি। আমি একবার মেয়র ছিলাম বলে মানুষের আস্থা অর্জন করেছি। পরের বার মানুষ আমাকে ভোট দিয়েছে। আপনারা জানেন, নির্বাচনে যে দলীয় প্রতীক পাবেন তাকে পাস করাতেই হবে। এর মাঝেও গোলাপগঞ্জ পৌরসভায় নৌকা, ধানের শীষ থেকে ৫-৭ গুণ বেশি ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছি। একজন প্রবাসী হিসেবে মানুষ আমাকে ভোট দিয়েছে। আমি প্রবাসীদের মুখ উজ্জ্বল রাখতে কাজ করছি।” তিনি বলেন, “ওবায়দুল কাদের সাহেবকে গিয়ে বলেছিলাম, আমি একজন প্রবাসী, নির্বাচন করবো। কিন্তু তিনি দেননি। ‘প্রবাসে যাও’ বলে দিয়েছিলেন। আমি তখন চ্যালেঞ্জ করে উনাকে বলেছিলাম, আপনারা যে প্রার্থীই দেন; আমি পাস করবো। আপনার বাংলাদেশি প্রার্থী পাস করাতে পারবেন না। এরপর তিনি আমাকে মনোনয়ন দেননি। আসলে আমাদের বাংলাদেশের মানুষের চরিত্র এখনো ঠিক হয়নি।” গোলাপগঞ্জের উন্নয়ন কর্মকাণ্ড বিষয়ে মেয়র রাবেল বলেন, “গোলাপগঞ্জ পৌরসভায় আমি এখন পর্যন্ত ১০০ কোটি টাকার কাজ করেছি। গোলাপগঞ্জ পৌরসভার ৯টি ওয়ার্ডকে আমি সাজিয়েছি। লাইটিং করেছি। আরিফ ভাই (সিলেটের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী) যেভাবে টাউনকে উন্নত করেছেন, আমি সেভাবে উন্নয়ন করেছি গোলাপগঞ্জের। আমরা প্রবাসী থাকায় বাংলাদেশের মতো মন-মানসিকতার নয়। এ কারণে কাজ করতে পেরেছি।” তিনি বলেন, “দেশ খুব সুন্দর এগিয়ে যাচ্ছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে দেশ আরও উন্নত হোক- এটা আমরা আশা করি। একজন ভালো মানুষ গোটা দেশকে ভালো করবে সেটি সম্ভব নয়। দেশে এখনো প্রচুর পরিমাণ দুর্নীতি হচ্ছে। আমরা যারা জনপ্রতিনিধি, আমরা তো গিয়ে ফান্ডিং আনি। আমরা মন্ত্রণালয়ে যাই। সচিবালয়ে সচিবদের সঙ্গে মিটিং করি, এলজিইডি মিনিস্টারের সঙ্গে মিটিং করি। তাদের কাছ থেকেই আমাদের ফান্ড আনতে হয়। ওখানে বিরাট একটা পার্সেন্টিজ দিয়ে আনতে হয়। আপনি ১০০ কোটি টাকার ফান্ড নিয়ে আসলেন। সেখানে ৫ পার্সেন্ট আগেই দিয়ে আসতে হয়। এটাই হচ্ছে বাস্তব দিক।” এদিকে, মেয়রের এমন বিস্ফোরক মন্তব্যে এখন তাঁর নির্বাচনী এলাকায় গোলাগগঞ্জে ব্যাপক চাঞ্চল্য দেখা দিয়েছে। স্থানীয় আওয়ামী লীগের তরফ থেকে রাবেল বিদ্ধ হচ্ছেন সমালোচনায়। স্থানীয় পৌরসভার কাউন্সিলর ও উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি রুহিন আহমদ খান বলেন, ‘ পার্সেন্টেজ দিয়ে বরাদ্দ আনতে হয় সেটি আমরা অতীতে কখনো শুনিনি। একজন জনপ্রতিনিধির বক্তব্য আরও পরিশীলিত হওয়া প্রয়োজন।’ পৌরসভার সাবেক মেয়র ও আওয়ামী লীগ নেতা জাকারিয়া আহমদ পাপলু বলেন, ‘আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ও এলজিইডি মন্ত্রী এবং সচিবদের নিয়ে তিনি যে বক্তব্য দিয়েছেন সেটি শিষ্টাচার বহির্ভূত। লন্ডনে গিয়ে তিনি দেশের মানুষের বিরুদ্ধে এমন দুর্নাম রটাবেন- সেটিও কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।’ প্রসঙ্গ, যুক্তরাজ্যের লন্ডনে যুবলীগের রাজনীতি করতেন আমিনুল ইসলাম রাবেল। দেশে ফিরে গোলপগঞ্জ পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি হন তিনি। আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীক নিয়ে গোলাপগঞ্জে পৌর নির্বাচন করতে চেয়েছিলেন। তবে দল তাকে মনোনয়ন দেয়নি। পরে স্বতন্ত্র থেকে প্রার্থী হয়ে বিজয়ী হন তিনি। একইভাবে গেল বছর এই গোলাপগঞ্জ পৌর নির্বাচনেও তিনি স্বতন্ত্র থেকে মেয়র নির্বাচিত হন। নির্বাচনে বিদ্রোহী হওয়ায় দল থেকে বহিষ্কার হয়ে পদও হারান তিনি।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category

ফেসবুকে আমরা