মঙ্গলবার জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তি ও উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে বিদেশে পাঠানোর দাবিতে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম আয়োজিত এক সমাবেশে তিনি এ কথা বলেন। এ সমাবেশ থেকে সংগঠনের নেতারা আগামী শনিবারের মধ্যে খালেদা জিয়াকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে না পাঠালে সর্বাত্মক আন্দোলনে যাওয়ার হুঁশিয়ারি দেন। মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘খালেদা জিয়া জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে। তার যেটা প্রয়োজন সেটা হচ্ছে উন্নত চিকিৎসা। ডাক্তাররা পরিষ্কার করে বলেছেন, আমাদের যা কিছু করা সম্ভব তা করেছি। আমাদের কাছে সেই উন্নত প্রযুক্তি নেই যা দিয়ে খালেদা জিয়াকে পরবর্তী চিকিৎসা দেওয়া সম্ভব হবে।’ বিএনপি মহাসচিব আরও বলেন, ‘আওয়ামী লীগ একাত্তরের পর জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন হতে শুরু করেছিল। শুধু বিচ্ছিন্ন হয়নি, তারা জনগণের ওপর নিপীড়ন করেছে, নির্যাতন করেছে। সমস্ত রাজনৈতিকদলকে নিষিদ্ধ করে দিয়ে একদলীয় শাসনব্যবস্থা বাকশাল প্রতিষ্ঠা করেছিল। ২০০৮ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসে এখন পর্যন্ত সংবিধানকে কাটাছেঁড়া করে এমনভাবে তৈরি করেছে যেখানে আজ কেউ কথা বলতে পারে না। আজকে কারও গণতান্ত্রিক অধিকার নেই, বাকস্বাধীনতা নেই। আজকের বিচার ব্যবস্থাকে সম্পূর্ণ দলীয়করণ করার চেষ্টা করা হয়েছে।’ আইনজীবী ফোরামের সদস্য সচিব সুপ্রিম কের্টের সিনিয়র আইনজীবী অ্যাডভোকেট ফজলুর রহমান বলেন, ‘আমরা এই সরকারকে চারদিন সময় দিলাম। রোববার আমরা দেশব্যাপী আইনজীবীরা অনশন ধর্মঘট করব। প্রত্যেক ঘরে, প্রত্যেক পাড়ায় পাড়ায় অনশন ধর্মঘট হবে। এরপরও যদি সরকার সোজা না হয় আমি জানি না কী হবে? আমি একজন মুক্তিযোদ্ধা, যুদ্ধ করে দেশ স্বাধীন করেছি। আজ সূর্য মুখ মেঘ ঢেকে রেখেছে, আগামীকাল কিন্তু সূর্য উঠবে। আজকে যদি এই সরকার আইনের কথা বলে দেশকে পদানত করে রাখে, এমন সময় আসবে এদেশে মানুষ মিছিলে মিছিলে রাজপথ প্রকম্পিত করবে, আন্দোলনে আন্দোলনে এদেশের রাজপথ আগুন জ্বালাবে, দাউ দাউ করে আগুন জ্বলবে। সেই দিনটা বেশি দূরে নয়।’ সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীন বলেন, ‘সরকারকে বলব, যদি খালেদা জিয়ার মৃত্যু দেখতে না চান, তাহলে অন্যকিছু চিন্তা না করে তাকে মুক্তি দেওয়ার ব্যবস্থা করুন। মুক্তি দেওয়ার কোনো আইনগত বাধা নেই।’ আইনজীবী ফোরামের সদস্য সচিব ফজলুর রহমানের সভাপতিত্বে ও অ্যাডভোকেট গাজী কামরুল ইসলাম সজলের সঞ্চালনায় সমাবেশে সুপ্রিম কোর্টের সিনিয়র আইনজীবী ব্যারিস্টার শাহজাহান ওমর, অ্যাডভোকেট মীর নাসির উদ্দিন, অ্যাডভোকেট নিতাই রায় চৌধুরী, অ্যাডভোকেট আহমেদ আজম খান, অ্যাডভোকেট তৈমুর আলম খন্দকার, ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন, অ্যাডভোকেট মাসুদ আহমেদ তালুকদার, ব্যারিস্টার বদরুদ্দোজা বাদল, অ্যাডভোকেট আবেদ রাজা, অ্যাডভোকেট শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাসসহ সারাদেশের বারের নেতারা বক্তব্য রাখেন। সমাবেশে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সম্পাদক ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজলও উপস্থিত ছিলেন।