সিলেটের কানাইঘাট উপজেলার রাজাগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে হত্যা মামলার অভিযোগপত্রভুক্ত আসামি বিলাল আহমদকে আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে। তৃণমূলের মতামতকে উপেক্ষা করে বিলাল আহমদকে মনোনয়ন দেওয়ায় স্থানীয় নেতা-কর্মীদের মধ্যে অসন্তোষ দেখা দিয়েছে।
বিলাল আহমদ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও উপজেলার তিনচটি গ্রামের বাবুর্চি জামাল উদ্দিন হত্যা মামলার অভিযোগপত্রভুক্ত আসামি। আগামী ৫ জানুয়ারি পঞ্চম ধাপে কানাইঘাটের ৯টি ইউপিতে নির্বাচন হবে। ৬ ডিসেম্বর কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ থেকে দলীয় প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করা হয়। এর মধ্যে রাজাগঞ্জ ইউপিতে বিলাল আহমদকে মনোনয়ন দেওয়া হয়। স্থানীয় নেতা-কর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গত ৩০ নভেম্বর ইউপি নির্বাচনে দলীয় প্রার্থী বাছাইয়ে উপজেলা আওয়ামী লীগ তৃণমূলের নেতাদের নিয়ে ভোটের আয়োজন করে। রাজাগঞ্জ ইউপিতে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সহসভাপতি আলী আকবর চৌধুরী সর্বোচ্চ ১৩ ভোট পান। অন্যদিকে বিলাল আহমদ পেয়েছেন ৭ ভোট। জেলা আওয়ামী লীগ থেকে কেন্দ্রে পাঠানো তালিকায় আলী আকবর ও বিলাল আহমদ—দুজনেরই নাম পাঠানো হয়। পরে কেন্দ্র থেকে বিলাল আহমদকে মনোনয়ন দেওয়া হয়। তৃণমূলের ভোটে প্রথম হওয়া আলী আকবর মনোনয়ন পাননি বলে দলের স্থানীয় নেতা-কর্মীদের মধ্যে ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। কানাইঘাট উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম বলেন, তৃণমূলের ভোটে আলী আকবর প্রথম হলেও দ্বিতীয় হওয়া বিলাল আহমদ মনোনয়ন পেয়েছেন। যেহেতু দল তাঁকে নৌকা প্রতীক দিয়েছে, তাই কিছু করার নেই। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ২০১৬ সালের ১৯ ফেব্রুয়ারি বাবুর্চি জামাল উদ্দিন হত্যার ঘটনায় নিহতের স্ত্রী শাহীনূর বেগম ছানুরী কানাইঘাট থানায় মামলা করেন। পুলিশ আদালতে অভিযোগপত্র জমা দিলে বাদী নারাজি দেন। এরপর মামলাটির তদন্তভার সিআইডির কাছে স্থানান্তরিত হয়। এরপর চলতি বছরের ২৫ মে সিআইডি সিলেটের সহকারী পুলিশ সুপার মো. শামীম উর রশীদ আদালতে সম্পূরক অভিযোগপত্র জমা দেন। এতে ১৪ নম্বর আসামি হিসেবে বিলাল আহমদের নাম আছে। মামলার বিষয়ে জানতে চাইলে বিলাল আহমদ প্রথম আলোকে বলেন, তিনি কোনো হত্যা মামলার অভিযোগপত্রভুক্ত আসামি নন। এটা তাঁর বিরুদ্ধে প্রতিপক্ষের ষড়যন্ত্র। বাদীপক্ষের আইনজীবী মো. আবদুর রহমান জানান, বিলাল আহমদ মামলার অভিযোগপত্রের ১৪ নম্বর আসামি। হত্যা মামলার পরপরই তাঁকে পুলিশ গ্রেপ্তার করেছিল। পরে তিনি জামিনে মুক্ত হন। ২৩ ডিসেম্বর মামলার পরবর্তী শুনানির তারিখ নির্ধারিত রয়েছে। আদালত সূত্রে জানা গেছে, ২০১৬ সালের ৭ সেপ্টেম্বর বিলাল আহমদ উচ্চ আদালত থেকে জামিন পান। উচ্চ আদালতের জামিনের পরিপ্রেক্ষিতে ওই বছরের ২১ সেপ্টেম্বর তিনি জামিনে মুক্ত হন।