• বুধবার, ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০১:৪১ অপরাহ্ন

‘টপ অর্ডার’ ছাড়াই পাকিস্তানের সঙ্গে খেলল বাংলাদেশ?

অনলাইন ডেস্ক / ৩৬২ Time View
Update : বৃহস্পতিবার, ৯ ডিসেম্বর, ২০২১

বৃষ্টি সহায়তার হাত বাড়িয়ে রেখেছিল। প্রথম দিন ৫৭ ওভার খেলা হলো, দ্বিতীয় দিন মাত্র ৬.২ ওভার। তৃতীয় দিন একটি বলও মাঠে গড়াল না। কিন্তু তারপরেও ঢাকা টেস্টে বাংলাদেশ হেরেছে ইনিংস ব্যবধানে।

পাকিস্তানের একমাত্র ইনিংসটি বৃষ্টির কারণে বারবার থেমে গেছে। শেষ পর্যন্ত চতুর্থ দিন বাবর আজম যখন ৩০০ রানে ইনিংস ঘোষণা করেন, তখন তিনি নিশ্চয়ই ভাবেননি, প্রায় দুদিন বৃষ্টিতে ভেসে যাওয়ার পরও এই ম্যাচ ইনিংস ব্যবধানে জিততে পারবেন! কিন্তু শেষ পর্যন্ত সেটিই হয়েছে। বাংলাদেশের টপ অর্ডার ব্যাটসম্যানদের যাচ্ছেতাই ব্যর্থতায় যে টেস্ট ড্র হওয়াটাই স্বাভাবিক, সে ম্যাচেই বাংলাদেশ হেরেছে ইনিংস ও ৮ রানে। পাকিস্তানের বিপক্ষে চট্টগ্রাম ও ঢাকার দুটি টেস্টে বলতে গেলে শীর্ষ চার ব্যাটসম্যানের কাছ থেকে কিছুই পায়নি বাংলাদেশ দল। টপ অর্ডারের ক্রমাগত ব্যর্থতা বাংলাদেশের ক্রিকেটে ভয়াবহ শঙ্কাই তৈরি করেছে। চট্টগ্রাম ও ঢাকার দুই টেস্টের চার ইনিংসে বাংলাদেশের শীর্ষ চার ব্যাটসম্যানের সম্মিলিত সংগ্রহ সে শঙ্কাকে আরও উসকে দেয়। এই চার ইনিংসে শীর্ষ চার ব্যাটসম্যান মিলে করেছেন যথাক্রমে ৪৮, ১৯, ৩৪ ও ২১! এই চার ইনিংসের মধ্যে তিনবার বাংলাদেশের শীর্ষ চার ব্যাটসম্যান অসহায় আত্মসমর্পণ করেছেন পাকিস্তানের দুই ফাস্ট বোলার শাহিন শাহ আফ্রিদি ও হাসান আলীর সামনে। গতি ও সুইং খেলায় ব্যাটসম্যানদের যে চিরাচরিত দুর্বলতা, সেটিই যেন হালে ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। চট্টগ্রাম ও ঢাকার দুটি টেস্টে সেটি আরও প্রকট। এই দুই টেস্টের চার ইনিংস দেখে মনে হয়েছে, শীর্ষ পর্যায়ের ব্যাটসম্যানরা বৈচিত্র্য আর সুইং খেলাটাই ঠিকমতো শেখেননি। স্পিন খেলাও কি শিখেছেন? ঢাকা টেস্ট দেখলে তো সেটি কারোরই মনে হবে না। এ টেস্টে বাংলাদেশের টপ অর্ডারকে শেষ করে দিয়েছেন আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে নবীন এক অফ স্পিনার—সাজিদ খান। সাজিদ ঢাকা টেস্টে ম্যান অব দ্য ম্যাচ হয়েছেন। বাংলাদেশের প্রথম ইনিংসে তিনি ৮ উইকেট নিয়েছেন মাত্র ৪২ রানে। দ্বিতীয় ইনিংসে নিয়েছেন আরও ৪ উইকেট। দুই ইনিংস মিলে তিনি ১২ উইকেট নিয়েছেন ১২৮ রানে। কাল ম্যাচ শেষে সাজিদের নিশ্চয়ই মনে হয়েছে, আবার কবে তিনি বাংলাদেশে টেস্ট খেলতে আসবেন! টেস্ট ক্রিকেটে এত সহজে উইকেট শিকার করার সুযোগ যে তিনি খুব কমই পাবেন। দুটি টেস্টেই বাংলাদেশের টপ অর্ডার ব্যাটসম্যানদের ব্যাটিং দেখে মনে হয়েছে, দীর্ঘ পরিসরের ক্রিকেটের মেজাজ বুঝতে অপারগ তাঁরা। বিশেষ করে তাঁদের আউট হওয়ার ধরন; ভুল সময়ে ভুল শট খেলে উইকেট দিয়ে আসা—বাংলাদেশের ক্রিকেটের ভবিষ্যৎকেই তাঁরা প্রশ্নের মুখে ফেলে দিয়েছেন। এ সিরিজে বাংলাদেশ যা একটু দৃঢ়তা দেখিয়েছে, সেটি দলের মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যানদের কল্যাণেই। চট্টগ্রামের প্রথম টেস্টে ৪৯ রানে ৪ উইকেট পড়ে যাওয়ার পর লিটন দাস আর মুশফিকুর রহিম হাল ধরেছিলেন। ধ্বংসস্তূপের মধ্যে দাঁড়িয়ে তাঁরা দুজন লড়াই করেছিলেন। মুশফিক অল্পের জন্য শতক না পেলেও লিটন সে ইনিংসে তাঁর টেস্ট ক্যারিয়ারের প্রথম শতকটি পেয়েছেন। এই দুজনের কল্যাণে ৩৩০ রান করেছিল বাংলাদেশ। পরে তাইজুল ইসলামের দারুণ বোলিংয়ে ৪৪ রানের লিড পেলেও সেটি মাঠে মারা গেছে শীর্ষ চার ব্যাটসম্যানের ব্যর্থতায়। চট্টগ্রামকে মিডল ও লোয়ার মিডল অর্ডার ব্যাটিংয়ে পাকিস্তানকে কোনোমতে জয়ের জন্য ২০২ রানের লক্ষ্য দিতে পেরেছিল বাংলাদেশ। কিন্তু সেটি যথেষ্ট হয়নি। ঢাকা টেস্টেও একই ব্যাপার। এবার তো পৌনে তিন দিন খেলা হওয়ার পরও ইনিংস হার। রসিকতা করে তাই বলাই যায়, পাকিস্তানের বিপক্ষে সিরিজে আসলে টপ অর্ডার ছাড়াই খেলেছে বাংলাদেশ। শীর্ষ চার ব্যাটসম্যানের ক্রমাগত ব্যর্থতা বাংলাদেশকে ন্যূনতম লড়াইটাও করতে দেয়নি।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category

ফেসবুকে আমরা