পুলিশের রমনা জোনের উপ-কমিশনার সাজ্জাদুর রহমান বিবিসি বাংলাকে জানিয়েছে, প্রমাণসাপেক্ষে অভিযুক্তরা যেকোনো সময় গ্রেফতার হতে পারেন। ঢাকার একটি আদালতে মামলাটি দায়ের করেন সাদ স্যাম রহমান নামে এক ব্যক্তি। পরে আদালত তদন্তের জন্য বিষয়টি ধানমন্ডি থানায় পাঠিয়ে দেয়। মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে, তাহসান, মিথিলা এবং শবনম ফারিয়া ইভ্যালির সাথে বিভিন্নভাবে সংশ্লিষ্ট ছিলেন, এবং বাদি ওই কোম্পানির মাধ্যমে প্রতারিত হয়েছেন। ধানমন্ডি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বিবিসি বাংলাকে জানিয়েছেন, এই মামলার তদন্ত শুরু করা হয়েছে। এদিকে পুলিশের রমনা বিভাগের উপ-কমিশনার সাজ্জাদুল হাসান বিবিসি বাংলাকে জানিয়েছেন, তদন্তে সত্যতা পাওয়া গেলে অভিযুক্তদের যেকোনো সময় আটক করা হতে পারে। তারা ‘তদন্ত চলার সময়ও আটক হতে পারেন, আবার প্রমাণসাপেক্ষে তদন্তের পরেও আটক হতে পারেন,’ বলেন পুলিশের এই কর্মকর্তা। ধানমন্ডি থানার পুলিশ জানিয়েছে, প্রতারণামূলকভাবে টাকা আত্মসাতের জন্য অভিযুক্তরা ইভ্যালিকে সহায়তা করেছেন এমন অভিযোগ মামলায় আনা হয়েছে। এজাহারের বরাত দিয়ে পুলিশ আরো জানিয়েছে, অভিযুক্তদের বিভিন্ন কথা এবং প্রমোশনাল কর্মকাণ্ডের কারণে বাদি ইভ্যালিতে বিনিয়োগ করেছেন এবং প্রতারিত হয়েছেন। মামলায় অন্য অভিযুক্তরা হলেন ইভ্যালির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ রাসেল, তার স্ত্রী ও প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান শামীমা নাসরীন, প্রতিষ্ঠানটির সাবেক প্রধান বিপণন কর্মকর্তা আরিফ আর হোসাইন, মোহাম্মদ আবু তাইশ, আকাশ ও তাহের। তাহসান খান যা বললেন মামলার বিষয়ে জানতে চাইলে তাহসান খান বিবিসি বাংলাকে বলেন, ইভ্যালির জন্য কোনো বিজ্ঞাপনে শ্যুটিং করার বহু আগেই তিনি প্রতিষ্ঠানটির সাথে চুক্তি বাতিল করেছেন। তিনি বলেন, ইভ্যালি সম্পর্কে তার ফেসবুকে অনেক অভিযোগ পাওয়ার কারণে তিনি এ সংক্রান্ত চুক্তিটি বাতিল করেন। এ মামলাকে তিনি ‘পরিষ্কার হয়রানি’ হিসেবে বর্ণনা করেন তাহসান খান বলেন, কোম্পানি কিভাবে কাজ করে সেটি একজন ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসাডার হিসেবে তার জানার কথা নয়। ‘বাংলাদেশের আইনগত প্রক্রিয়া এবং আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর উপর আমার পূর্ণ আস্থা আছে। আমি বিশ্বাস করি, যথাযথ তদন্তের মাধ্যমে এটা প্রমাণিত হবে যে ব্র্যান্ড এনড্রোসার হিসেবে কোম্পানির কর্মকাণ্ডের সাথে আমরা কোনোভাবেই জড়িত নই,’ বিবিসিকে বলেন তাহসান খান। মালিকদের শীর্ষস্থানীয় দু’জনকে গ্রেফতার করে কারাগারে নেয়ার পর ইভ্যালির ব্যবস্থাপনার জন্য অক্টোবর মাসের মাঝামাঝি পাঁচ সদস্যের একটি অন্তর্বর্তীকালীন বোর্ড গঠন করে দিয়েছে হাইকোর্ট। এই বোর্ডের প্রধান হিসেবে আছেন সাবেক বিচারপতি এ এইচ এম শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক। সেপ্টেম্বর মাসের মাঝামাঝি সময় ইভ্যালির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ রাসেল এবং চেয়ারম্যান শামীমা নাসরিনকে অর্থ আত্মসাতের একটি মামলায় গ্রেফতার করে র্যাব। তাদের গ্রেফতারের পর ইভ্যালির অফিসগুলো বন্ধের ঘোষণা দেয় কোম্পানিটি। এর আগে জুলাই মাসে বাংলাদেশের বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি জানান, গ্রাহক ও সরবরাহকারীদের কাছ থেকে অগ্রিম হিসেবে নেয়া ইভ্যালির ৩০০ কোটি টাকার কোনো অস্তিত্ব পাওয়া যাচ্ছে না। জুন মাসে বাংলাদেশ ব্যাংকের করা তদন্তে এই তথ্য উঠে আসে।