• সোমবার, ২০ জানুয়ারী ২০২৫, ০৬:৪৭ অপরাহ্ন
শিরোনাম
বিআরডিবি কুমিল্লা জেলা সিবিএ’র নির্বাচন অনুষ্ঠিত সংস্কার ও নির্বাচনের মধ্যে কোনো বিরোধ নেই: ফখরুল জাহানারা ইসলাম ইন্তেকালে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী মহিলা দলের শোক প্রকাশ প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠক করেছেন নবীন উদ্যোক্তারা শেখ হাসিনাকে দেশে ফিরিয়ে এনে বিচার করা হবে : প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব জুলাই গণঅভ্যুত্থানে আহতদের চিকিৎসা বাবদ ১৫০ কোটি টাকা বরাদ্দ দিয়েছে সরকার এনজিএস সিমেন্ট কোম্পানির ছত্র ছায়ায় এয়ার মোহাম্মদের বিরুদ্ধে জোরপুর্বক জমি দখলের অভিযোগ : আমি আমার জন্য ভোট চাইতে আসিনি আমি ধানের শীষ মার্কায় ভোট চাইতে এসেছি–মোবাশ্বের আলম ভুঁইয়া আওয়ামী সরকার আমলে মানুষের অধিকার হরণ হয়েছিল, গণতন্ত্র ধ্বংস হয়েছিল- ওয়াকিল হোসেন (বগা) চকরিয়ায় স্বামীর ছুরিকাঘাতে স্ত্রীর মৃত্যু, মুমূর্ষু অবস্থায় শাশুড়ি

মিথ্যা তথ্যের হুমকির ব্যাপারে সতর্ক করলেন নোবেলজয়ী দুই সাংবাদিক

অনলাইন ডেস্ক / ৪০১ Time View
Update : শনিবার, ১১ ডিসেম্বর, ২০২১

নিরাপত্তা এবং গণতন্তের জন্য গুজবকে ক্রমবর্ধমান হুমকি হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন শান্তিতে নোবেল জয়ী সাংবাদিক মারিয়া রেসা ও দিমিত্রি মৌরাতভ। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এসব কথা বলেন তারা।

ফিলিপিন্সের সাংবাদিক রেসা বলেন, ‘মিথ্যা যখন সত্যে পরিণত হয়’ তখন তা গণতন্ত্রের জন্য বিশাল হুমকি। আর দিমিত্রি মৌরাতভ বলেছেন, ‘সত্য পরবর্তী সময়ে’র মতো ভয়ঙ্কর অবস্থায় আছে বর্তমান সমাজ। শুক্রবার নরওয়ের অসলোতে এক অনুষ্ঠানে এই দুই সাংবাদিককে মত প্রকাশের স্বাধীনতার সুরক্ষায় অবদান রাখায় ‘দ্য নরওয়েজিয়ান নোবেল কমিটি’ শান্তিতে নোবেল পুরস্কার তুলে দেয়। দীর্ঘস্থায়ী শান্তি এবং গণতন্ত্রের পূ্র্বশর্ত হলো মত প্রকাশের স্বাধীনতা।  এই দুই সাংবাদিক এবং তাদের টিম নিজ নিজ দেশে সাংবাদিকতার কারণে আক্রমণের শিকার হয়েছেন। ২০১২ সালে ফিলিপিন সরকারের সমালোচক অনুসন্ধানী সাংবাদিকতার ওয়েবসাইট র্যা পলার প্রতিষ্ঠা হয়। ৫৮ বছর বয়সী রেসা র্যা পলারের সহ-প্রতিষ্ঠাতা। আর ১৯৯৩ সালে রাশিয়ার স্বাধীন সংবাদপত্র নোভাজা গ্যাজেটা প্রতিষ্ঠিত হয়। মৌরাতভ সেটির প্রতিষ্ঠাতাদের একজন। ক্রেমলিনের পদাঙ্ক অনুসরণ না করা পত্রিকার মধ্যে নোভাজা গ্যাজেটাও একটি। প্রসঙ্গত, ১৯৩৫ সালে শেষবার কার্ল ভন ওজেটস্কি নামে জার্মান এক সাংবাদিককে শান্তিতে নোবেল দেওয়া হয়েছিল। হিটলার যে পুনরায় সশস্ত্র হচ্ছেন সে ব্যাপারে বিশ্বকে সতর্ক করে তিনি নোবেল পেয়েছিলেন। তবে নাৎসি ক্যাম্পে বন্দি থাকায় নরওয়ে গিয়ে তিনি পুরস্কারটি গ্রহণ করতে পারেননি। পুরস্কার গ্রহণ করে নরওয়ে থেকে রেসা আল-জাজিরাকে সেই প্রসঙ্গ টেনে বলেন, সেই সময়ের (হিটলারের সময়) সঙ্গে বর্তমানও সমান্তরালভাবে চলছে। কারণ এখন কর্তৃত্ববাদ পুনরায় ক্রমবর্ধমান হুমকি হয়ে উঠছে। আমি মনে করি এটাই সংকেত যা নোবেল কমিটি দিয়েছে। আমরা তেমনি একটি ঐতিহাসিক মুহূর্তে আছি। এখন আমাদের কিছু করতে হবে।  তিনি বলেন, গণতন্ত্রের জন্য সবচেয়ে হুমকি হলো ‘মিথ্যা যখন সত্যে পরিণত হয়’। কারণ সেটি আমাদের সবার চেনা বাস্তবতাকে ধ্বংস করে ফেলে এবং তা মানুষকে ম্যানিপুলেট করতে অনুমোদন করে। মৌরাতভও আল জাজিরাকে বলেন, ওই গুজব খুবই গুরুত্বপূর্ণ ছিল এবং হুমকি বাড়ছে। ম্যানিপুলেশন যুদ্ধের দিকে নিয়ে যায়। আমরা ‘সত্য পরবর্তী সময়ের’ মধ্যবর্তী স্থানে আছি। এখন সবাই তার নিজের আইডিয়া নিয়েই উদ্বিগ্ন, সত্য নিয়ে নয়। তিনি বলেন, সমাজবিজ্ঞানীরা দেখিয়েছেন সত্য কি এবং মিথ্যা কি জানার পরও ৭৫ ভাগ মানুষ মিথ্যাকেই সত্য মনে করে। ব্যাপারটা যেন এমন, তারা মিথ্যাকেই বেশি পছন্দ করেন। ইতোমধ্যে এটা ঘটেছে। আমরা মানব মনের ম্যানিপুলেশনের সবচেয়ে নিচুতে অবস্থান করছি। অবশ্য আমরা একইসঙ্গে সত্যের জন্যও লড়াই করছি। শুক্রবার পুরস্কার গ্রহণ পরবর্তী বক্তব্যে রেসা যুক্তরাষ্ট্রের প্রযুক্তি জায়ান্ট ফেসবুকের সমালোচনা করে বলেন, প্রতিষ্ঠানটি মিথ্যা এবং ঘৃণা ছড়িয়ে মুনাফা করছে। সংবাদ প্রতিষ্ঠানকে নিজেদের মধ্যে সহযোগিতা এবং একে অন্যকে সাহায্য করতে হবে। রেসা বলেন, একটা সময় আমরা একে অন্যের সঙ্গে প্রতিযোগিতা করতাম, সেইদিন চলে গেছে। এখন আমরা সবাই সত্যের জন্য লড়াইয়ে একই অবস্থানে আছি। আমি সব সময় বলি নতুন গেটকিপার, প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান সবাইকে গণপরিসরের জন্য দায়িত্ব পালন করতে হবে। উল্লেখ্য, সম্প্রতি আল-জাজিরা দর্শকদের জন্য একটি ভোটাভুটির আয়োজন করে। যেখানে তাদের কাছে জানতে চাওয়া হয় তারা সাংবাদিকতায় বিশ্বাস করে কি না। ৭১ শতাংশ দর্শক না উত্তর দিয়েছেন।  এদিকে বৃহস্পতিবার ব্রাসেলসভিত্তিক ইন্টারন্যাশনাল ফেডারেশন অব জার্নালিস্ট (আইএফজে) এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, ২০২১ সালে সাংবাদিকদের জেলে পাঠানোর ঘটনা বেড়েছে। এবছর ৩৬৫ জন সাংবাদিককে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। গত বছর এই সংখ্যাটি ছিল ২৩৫। চীন সবচেয়ে বেশি ১০২ জন সাংবাদিককে জেলে পাঠিয়েছে। এছাড়া তুরস্ক ৩৪, বেলারুশ এবং ইরিত্রিয়া ২৯, মিসর ২৭ ও ভিয়েতনাম ২১ জন সাংবাদিককে জেলে পাঠিয়েছে। রাশিয়ায় এখনো ১২ জন সাংবাদিক কারাবন্দি আছেন। অন্যদিকে ফিলিপিন্সে তিন জন সাংবাদিককে হত্যা করা হয়েছে।  এছাড়া চলতি বছরে অন্তত ৪৫ জন সাংবাদিক ও মিডিয়া কর্মীকে হত্যা করা হয়েছে। এর মধ্যে ৩৩ জনকে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হামলা চালিয়ে হত্যা করা হয়। এই প্রসঙ্গে রেসা বলেন, তিনি খুব ভাগ্যবান তিনি নরওয়ে যেতে পেরেছেন। কারণ মাত্র ৩৬ ঘণ্টা আগে তার সাবেক সহকর্মী জেসাস ম্যালাবানানকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। আর এই হত্যাকাণ্ড নিয়ে ২০১৬ সালে ফিলিপিন্সের প্রেসিডেন্ট রদ্রিগো দুতের্তে ক্ষমতায় আসার পর ২২জন সাংবাদিককে হত্যা করা হলো।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category

ফেসবুকে আমরা