চলতি বছর ডেঙ্গু দেশের জন্য অশনিসঙ্কেত। ২০০০ সাল থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত ২২ বছরে দেশে এডিস মশা বাহিত ডেঙ্গু রোগ যে প্রভাব বিস্তার করতে পারেনি ২০২৩ সালে তার চেয়ে বেশি প্রভাব বিস্তার করে। ২০২৩ সালের তুলনায় ২০২৪ সাল আরও ভয়াবহ পরিণতি অপেক্ষা করছে। গতকাল রোববার জাতীয় প্রতিষেধক ও সামাজিক চিকিৎসা প্রতিষ্ঠান (নিপসম) মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত বৈজ্ঞানিক সেমিনার এই তথ্য জানানো হয়।
নিপসম পরিচালক অধ্যাপক ডা. শামিউল ইসলামের সভাপতিত্বে সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন প্রতিষ্ঠানটির এন্টমোলজি বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. গোলাম ছারোয়ার। তিনি বলেন, ২০২৪ সালের প্রতিটি মাস আগের যেকোনো সময়ের তুলনায় ভয়ঙ্কর। এই বছর ডেঙ্গু যে মারাত্মক বিস্তার লাভ করবে সেটি মৌসুম পরবর্তী ও প্রাক মৌসুম জরিপে উঠে এসেছে। সেখানে দেখা গেছে, ঢাকার দুই নগরীতে এডিস মশার লার্ভার ঘনত্বের ভয়াবহ চিত্র। এই বছর প্রচলিত পদ্ধতি ব্যবহার করে এডিস নিয়ন্ত্রণ সম্ভব নয়। কারণ যে কীটনাশক ব্যবহার করা হয় এবং যেভাবে, যে পদ্ধতিতে ব্যবহার করা হয় সেটি যথাযথ নয়। ফলে এডিস মশা কীটনাশক প্রতিরোধী হয়ে উঠেছে। অন্যদিকে মশার শত্রু বিভিন্ন কীট-পতঙ্গ মারা পড়ছে। ড. ছারোয়ার বলেন, চলতি বছর এডিসের ভয়াবহতা থেকে রক্ষা পেতে হলে সার্বিক ভাবে সমন্বিত পদ্ধতি প্রয়োগ করতে হবে।
সভাপতির বক্তব্যে অধ্যাপক ডা. শামিউল ইসলাম ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে বিশেষজ্ঞ সুপারিশসমূহ তুলে ধরে বলেন, সমন্বিত এবং সুসংহত কার্যক্রমের মাধ্যমে ডেঙ্গু রোগের মোকাবিলা করতে হবে। ডেঙ্গু প্রতিরোধে বিশ্বের যে সব দেশ সফল হয়েছে তাদের অর্জিত অভিজ্ঞতা জানতে হবে। পাশাপাশি ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে দেশের প্রযোজ্য আইনের যথাযথ প্রয়োগ নিশ্চিত করতে হবে।
সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি অধ্যাপক ড. মো. গিয়াসউদ্দিন মিয়া। বিশেষ অতিথি ছিলেন স্বাস্থ্য অধিদফতরের পরিচালক (রোগ নিয়ন্ত্রণ) ডা. শেখ দাউদ আদনান, শের-ই-বাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মো. নজরুল ইসলাম প্রমুখ।