ঘূর্ণিঝড় রিমালের প্রভাবে প্রবল বৃষ্টি ও জলোচ্ছ্বাস বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকায় ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়েছে। যেখানে প্রায় ৮৪ লাখ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এর মধ্যে ৩৬ লাখই শিশু। তাদের জরুরি সাহায্য প্রয়োজন বলে জানিয়েছে আন্তর্জাতিক বেসরকারি সংস্থা সেভ দ্য চিলড্রেন।
আজ মঙ্গলবার রাতে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানিয়েছে সংস্থাটি।
সেভ দ্য চিলড্রেন বলছে, বাংলাদেশের দক্ষিণের উপকূলীয় নিম্নাঞ্চলে ঘূর্ণিঝড় রিমালের প্রভাবে গত রবিবার ভারী বৃষ্টিপাত হয় এবং গতকাল সোমবার পর্যন্ত বাতাসের গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় প্রায় ১৩৫ কিলোমিটার পর্যন্ত। স্থানীয় কর্তৃপক্ষের মতে এই ঘূর্ণিঝড়ে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে প্রায় ৮৪ লাখ মানুষ, যার মধ্যে প্রায় ৩৬ লাখই শিশু। ঝড়ের পূর্বপ্রস্তুতি হিসেবে প্রায় ৮ লাখ মানুষকে আশ্রয়কেন্দ্রে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে এবং ৭৮ হাজার স্বেচ্ছাসেবককে ত্রাণ তৎপরতায় সহায়তা করার জন্য নিযুক্ত করা হয়েছে। ঝড়ের প্রভাবে ব্যাপক জলোচ্ছ্বাসের কারণে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ ভেঙে যাওয়ায় এই অঞ্চলের মানুষ আশ্রয় কেন্দ্রগুলোতে আটকা পড়েছে।
সংকট কাটিয়ে উঠতে সেভ দ্য চিলড্রেন, বাংলাদেশ-এর একটি জরুরি স্বাস্থ্যসেবা দলসহ মোট চারটি দল পটুয়াখালী, বরগুনা ও সাতক্ষীরায় ঘূর্ণিঝড় রেমাল আক্রান্ত মানুষের সহায়তায় কাজ করছে বলেও বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়।
সেভ দ্য চিলড্রেন, বাংলাদেশ-এর কান্ট্রি ডিরেক্টর সুমন সেনগুপ্ত বলেছেন, ‘এই ঘুর্ণিঝড়ের ক্ষয়ক্ষতি আবারও প্রমাণ করে আবহাওয়ার দিক দিয়ে বাংলাদেশ কতটা ঝুঁকির মধ্যে আছে। গত মাসে শিশুরা যেখানে অত্যধিক গরমে কষ্ট পেয়েছে তেমনি এখন তাদের মোকাবিলা করতে হচ্ছে জলাবদ্ধতা এবং ঘুর্ণিঝড়ের অন্যান্য ধ্বংসযজ্ঞকে। তাপপ্রবাহের কারণে কিছুদিন আগে তাদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো বন্ধ করা হয়েছিল, এখন সেগুলো আবারও বন্ধ হয়ে গেল জরুরি আশ্রয়কেন্দ্রের কারণে।’
তিনি বলেন, ‘হাজার হাজার স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবক দিনরাত অক্লান্ত পরিশ্রম করে সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ মানুষটিকেও ঘুর্ণিঝড় আশ্রয়কেন্দ্রে নিয়ে যেতে পেরেছে। ফলে অনেক মূল্যবান জীবন রক্ষা করা গেছে। কিন্তু জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে এ ধরনের দুর্যোগের সংখ্যা এবং তীব্রতা যেভাবে দিনদিন বৃদ্ধি পাচ্ছে তাতে বিপন্ন হচ্ছে শিশুর জীবন ও অধিকার।’
বিশ্বনেতাদেরকে অবশ্যই জলবায়ু পরিবর্তনজনিত এই ধরনের বিপর্যয়ের মূল কারণ খুঁজে বের করে তা মোকাবিলার পদক্ষেপ নিতে হবে বলেও উল্লেখ করেন সুমন সেনগুপ্ত।