মে ও জুন মাসের আমদানি বিল পরিশোধের জন্য এশিয়ান ক্লিয়ারিং ইউনিয়নের (এসিইউ) মাধ্যমে ১.৪২ বিলিয়ন ডলার পরিশোধ করা হয়েছে। ফলে দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ কমে বুধবার (১০ জুলাই) ২০.৪৬ বিলিয়ন ডলারে নেমে এসেছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যমতে, ৪ জুলাই আইএমএফ স্বীকৃত বিপিএম৬ অনুযায়ী রিজার্ভের পরিমাণ ছিল ২১.৭৮ বিলিয়ন ডলার। অর্থাৎ, গত ছয় দিনে রিজার্ভ কমেছে ১.৩২ বিলিয়ন ডলার।
উল্লেখ্য, আঞ্চলিক আমদানি বাবদ আর্থিক লেনদেন সহজ করতে এশিয়ান ক্লিয়ারিং ইউনিয়ন পেমেন্ট গেটওয়ে ব্যবহার করা হয়। বাংলাদেশ, ভুটান, ভারত, ইরান, মালদ্বীপ, মিয়ানমার, নেপাল, পাকিস্তান এবং শ্রীলঙ্কা – এই নয়টি সদস্য দেশের মধ্যে এই পদ্ধতিতে অর্থ লেনদেন হয় এবং প্রতি দুই মাস অন্তর বিল পরিশোধ করা হয়।
এর আগে গত ৮ মে, বাংলাদেশ ব্যাংক মার্চ-এপ্রিল পর্যায়ের আমদানি বাবদ ১.৬ বিলিয়ন ডলার পরিশোধ করে। পরিশোধের পর ওই সময় রিজার্ভের পরিমাণ ছিল ১৮.২২ বিলিয়ন ডলার।
অন্যদিকে, জুন মাসের শেষ নাগাদ আইএমএফের তৃতীয় কিস্তিসহ চারটি বহুপাক্ষিক ঋণদাতা এবং একটি দ্বিপক্ষীয় অংশীদারের কাছ থেকে বাংলাদেশ ২.৩৬ বিলিয়ন ডলারেরও বেশি অর্থ পেয়েছে। গত দুই বছর ধরে ক্রমহ্রাসমান বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ এ অর্থ প্রাপ্তি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে।
এ প্রসঙ্গে উল্লেখ্য, চলতি বছরের ৩০ জুনের মধ্যে বাংলাদেশের নীট আন্তর্জাতিক রিজার্ভ (এনআইআর) ১৪.৬৯ বিলিয়ন ডলারে রাখার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছিল আইএমএফ। বাংলাদেশ ব্যাংক জানিয়েছে, জুন মাসের শেষে দেশের নীট বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ছিল ১৬ বিলিয়ন ডলারেরও বেশি।
বিপিএম৬ অনুযায়ী, ৩০ জুন পর্যন্ত দেশের মোট রিজার্ভ ছিল ২১.৮৩ বিলিয়ন ডলার। বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র মো. মেজবাউল হক জানান, গত ২৬ জুন এই পরিমাণ ছিল ১৯.৪ বিলিয়ন ডলার।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্যমতে, জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারি পর্যায়ে এসিইউ’র মাধ্যমে বাংলাদেশকে ১.২৯ বিলিয়ন ডলার পরিশোধ করতে হয়েছিল। পরিশোধের পর দেশের রিজার্ভ কমে ২০ বিলিয়ন ডলারে নেমে আসে।
এদিকে, বাংলাদেশ ব্যাংকের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চলমান বৈদেশিক মুদ্রার সংকটের মধ্যেই গত ২৩ মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ ঋণপত্র (এলসি) খোলা হয়েছে। গত মে মাসে ৬.৮৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের এলসি খোলা হয়েছে।
এর আগে, ২০২২ সালের জুন মাসে সর্বোচ্চ ৭.০২ বিলিয়ন ডলারের এলসি খোলা হয়েছিল। এরপর থেকে ডলারের বিনিময় হারে ওঠানামা এবং দেশীয় মুদ্রা টাকার অবমূল্যায়নের কারণে এলসি খোলার ক্ষেত্রে ক্রমহ্রাসমান প্রবণতা দেখা যাচ্ছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যমতে, সদ্য সমাপ্ত অর্থবছরের প্রথম নয় মাসে, আগের অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় এলসি খোলা ও এলসি পরিশোধের হার যথাক্রমে ১.৮৭% ও ১২.৫৯% কমেছে।