মৌলভীবাজার জেলা প্রতিনিধি:
মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলার চাতলাপুর শুল্ক স্টেশন দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানিসহ সব বাণিজ্যিক কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। বৃহস্পতিবার (২৮ নভেম্বর) সকাল থেকেই চাতলাপুর শুল্ক স্টেশন দিয়ে কোন মালবাহি গাড়ি চলাচল করতে পারেনি। ২৭ নভেম্বর বুধবার বিকেলে ভারতের কৈলাশহরে ইসকন সদস্যরা চাতলাপুর শুল্ক স্টেশনের রাস্তা বন্ধ করে দেন। এতে বাংলাদেশ থেকে মালবাহী গাড়ি চলাচল বন্ধ রয়েছে। ভারতের কৈলাশহরে ইসকন সদস্যদের বাঁধায় হঠাৎ করেই ভারতের দিকে চাতলাপুর শুল্ক স্টেশনের রাস্তা বন্ধ করে দেওয়া হয়। কৈলাশর রাস্তায় লাল কাপড় লাগিয়ে বাঁশের বেড়া দেওয়া হয়েছে। মাছ, পাথর ও প্লাস্টিক আইটেম ভারতে রপ্তানি করি। বর্তমানে মাছের গাড়ি নিয়ে চরম অনিশ্চয়তায় আছি। এতে বন্ধ হয়ে যায় দুই দেশের বাণিজ্যিক কার্যক্রম।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, চিন্ময় কৃষ্ণ দাসকে গ্রেফতারের পর থেকে মৌলভীবাজার সীমান্তবর্তী ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের কৈলাশহরে বিক্ষোভ করে আসছেন ইসকন সদস্যরা। শুল্ক স্টেশনে মিছিল নিয়ে জড়ো হন কয়েকশ’ লোক। তারা সীমান্ত এলাকায় বিক্ষোভ করেন। মৌলভীবাজারের সীমান্তবর্তী এলাকা কুলাউড়া উপজেলার চাতলাপুর ও জুড়ী উপজেলার বটুলি শুল্ক স্টেশন দিয়ে ১৩দিন ধরে বন্ধ রয়েছে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানিসহ সব ধরনের বাণিজ্যিক কার্যক্রম।
মৌলভীবাজারের চাতলাপুর ও বটুলি শুল্ক স্টেশন দুটির বিপরীত পাশে ভারতের ত্রিপুরা রাজ্য। গত ২৭শে নভেম্বর থেকে চাতলাপুর চেকপোস্টে আমদানি রপ্তানি কিছুই হচ্ছে না। আমাদের সাইটে কোনো সমস্যা না, ভারতের সাইট থেকে ইমপোর্টরা। কোনো পণ্য গ্রহণ করছে না। এই চেকপোস্ট দিয়ে প্রতিদিন গড়ে ২৫/৫০ মেট্রিক টন মাছ রপ্তানি করা হয়, এখন রপ্তানি বন্ধ থাকায় এটা শূন্যের কোঠায় নেমে এসেছে সরকার তো রাজস্ব হারাচ্ছে সকল আমদানি রপ্তানি কার্যক্রম বন্ধ।
স্থানীয় বাসীন্দারা জানান চাতলাপুর চেকপোস্ট যেখান দিয়ে সবসময় আমাদের এক্সপোর্ট- ইমপোর্ট মালামাল গুলো ভারত থেকে আসে এবং যায়। এখানে অনেক শ্রমিক আছে যারা কাজ করে এসবের কারণে তারা এখন বেকার হয়ে পড়েছে। ইসকন স¤প্রদায়ের লোকজন এসে বেড়া দিয়ে বন্ধ করে দিয়েছিল। এখানে প্রায় ত্রিশ থেকে পঁয়ত্রিশ টা মাছের গাড়ি ছিল,আরএফএল সহ বিভিন্ন প্লাস্টিক পণ্যের গাড়িও ছিল যা ভারতে পাঠানোর জন্য প্রস্তুতি নিয়ে এসেছিল। কিন্তু হঠাৎ করে কিছু লোকজন এসে হট্টগোল সৃষ্টি করে চেকপোস্ট বন্ধ করে দিয়েছে এতে বাংলাদেশের মানুষেরও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল এবং ভারতের যারা পণ্য অর্ডার করেছিল তারাও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
চাতলাপুর এলসি স্টেশনের ব্যবসায়ী সমিতির যুগ্ন সম্পাদক ও মেসার্স রিমন ট্রেডার্সের সত্বাধীকারী সাইফুর রহমান বলেন, প্রায় দশ বারো দিন যাবত আমাদের বর্ডারের পরিস্থিতি খুবই খারাপ। যেদিন চেকপোস্ট বন্ধ করা হয়েছে সেদিন আমাদের পাঁচ গাড়ি মাজ আসছিল পরে হঠাৎ করে এসব ঝামেলা কারণে সব বন্ধ হয়ে যায়,ভারত থেকে জানায় আমাদের মাছ তারা গ্রহণ করবে না ।এতে আমাদের প্রায় এক কোটি টাকার উপরে মাছ ছিল গাড়িতে। এখন এসব মাছ আমরা ফ্রিজিং করে রেখেছি। এখন আমাদের কি হবে কোনো ব্যবস্থা হবে কি না কিছুই বুঝতে পারছি না। শুধু মাছ নয় আরো পণ্য যেমন আরএফএল প্লাস্টিক পণ্য , পাথর এসব রপ্তানি করি। সবকিছু মিলিয়ে এখন আমরা ক্ষতির সম্মুখীন দাঁড়িয়ে আছি।
চাতলাপুর স্থল শুল্ক স্টেশন সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা বলেন নিয়াজ মোর্সেদ ভূইয়া বলেন এটা মনে করেন ব্যবসায়ীদের রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে এমন হচ্ছে এটা হয়তো সাময়িকের জন্য ।এটা উভয় দেশের মনোভাবের একটা বিষয়। হয়তো আমরা আশাবাদী যে অচিরেই এটা শেষ হয়ে যাবে। এতে বাংলাদেশেরও ভালো ইন্ডিয়ার জন্যও ভালো। যেহেতু এটা রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে এমন হচ্ছে, যখনি রাজনৈতিক স্থিরতা আসবে আশাকরি এটা আর থাকবে না বেশিদিন।আগের চেয়ে সম্পর্ক ভালো হতে পারে আমার বিশ্বাস।