• শুক্রবার, ১৩ জুন ২০২৫, ০২:১০ অপরাহ্ন
শিরোনাম
বিএনপি ও গণঅধিকার পরিষদের সংঘর্ষ : রাত দেড়টা পর্যন্ত অবরুদ্ধ নুর দুইবার হজের ফ্লাইট মিস করা সেই আমের গাদ্দাফির মৃত্যু খবর ভাইরাল ভারতে বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় তারেক রহমানের শোক অধ্যাপক ইউনূসের কিংস তৃতীয় চার্লস হারমনি অ্যাওয়ার্ড গ্রহণ ভারতে বিমান দুর্ঘটনায় প্রধান উপদেষ্টার শোক প্রকাশ, সব ধরনের সহায়তা প্রদানে প্রস্তুত রয়েছে বাংলাদেশ ঢোলারহাট ইউনিয়নের ৯ নং ওয়ার্ডে নেই স্কুল, দূরে যেতে অনীহা কোমলমতি শিশুদের লক্ষ্মীপুরে ইমাম মিলন হত্যায় অভিযুক্তদের শাস্তির দাবিতে জাতীয় ইমাম সমিতির সংবাদ সম্মেলন ডিমলা থানায় ধর্ষণের চেষ্টা মামলার অভিযোগ না নেওয়ায় ভুক্তভোগীর সংবাদ সম্মেলন  সাতকানিয়ায় বালু ব্যবসায়ীকে অপহরণের পর যৌথ বাহিনীর অভিযানে উদ্ধার কোরবানির পর হজমশক্তি বাড়াতে যেসব খাবার খাবেন

বেনাপোলের ইতিহাস,দর্শনীয় স্থান ও পরিচিতি।

মোঃখসরুনোমান সংগ্রাম, / ৯১ Time View
Update : বৃহস্পতিবার, ১২ ডিসেম্বর, ২০২৪

বেনাপোল প্রতিনিধিঃ

বন্দরনগরী বেনাপোল ভারতের সীমান্তবর্তী বাংলাদেশের একটি পৌরশহর যা যশোর জেলার শার্শা উপজেলার অন্তর্ভুক্ত।বেনাপোলে প্রবেশের দ্বারে একটি বড় পৌরগেট আছে যেটা বাংলাদেশের অন্য কোন পৌরসভায় নেই। বেনাপোল যশোর জেলার, শার্শা উপজেলার অন্তর্গত একটি পৌরশহর। এর নিজস্ব একটি থানা আছে। এই থানাটি বেনাপোল পোর্ট থানা নামে পরিচিত।

এখানে পৌরসভার প্রশাসনের জন্য নিজস্ব কার্যালয় আছে যা বেনাপোল পৌরসভা নামে পরিচিত । ২০০৬ সালের ০৫ জানুয়ারী বেনাপোল পৌরসভা গঠিত হয় এবং একই বছরের ১৬ এপ্রিল প্রশাসক নিয়োগের মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকভাবে পৌরসভার কার্যক্রম শুরু হয়। প্রতিষ্ঠার মাত্র ০৪ বছরের মাথায় ইংরেজী ০১/১২/২০১০ ইং তারিখ সরকারী প্রজ্ঞাপনে পৌরসভাকে গ শ্রেণি হতে খ শ্রেণিতে উন্নীত করা হয় এবং  ২০/০৯/২০১১ তারিখে ‘ক’ শ্রেণীতে উন্নীত হয়। বাংলাদেশের সর্ববৃহৎ স্থলবন্দর এখানে অবস্থিত। এছাড়াও এখানে রয়েছে একটি রেলস্টেশন,পর্যটন মোটেল,ফায়ার সার্ভিস স্টেশন,বিজিবি ক্যাম্পসহ ১২টি ব্যাংকের শাখা।
১। পৌরসভার নামঃ বেনাপোল পৌরসভা
২। স্থাপনকালঃ ২০০৬ খ্রিঃ।
৩। প্রশাসক নিয়োগঃ ১৬/০৪/২০০৬ খ্রিঃ।
৪। প্রথম নির্বাচনঃ ১৩/০১/২০১১ খ্রিঃ।
৫। প্রথম নির্বাচিত মেয়রের নামঃ জনাব মোঃ আশরাফুল আলম লিটন ।
দ্বিতীয় নির্বাচিত মেয়রঃ জনাব মোঃ নাসির উদ্দীন।

** বর্তমান প্রশাসক জনাব সুজন সরকার।
৬। প্রথম সভার তারিখঃ ১৭/০২/২০১১ খ্রিঃ।
৭। পৌর কাউন্সিলদের সংখ্যাঃ ১২ জন (০৯ জন পুরুষ,০৩ জন মহিলা)
৮। কর্মরত কমর্কতা/কর্মচারীর সংখ্যাঃ ৪২ (বিয়াল্লিশ) জন
৯। পৌরসভার শ্রেণীঃ “ক” শ্রেণী তারিখঃ ২০/০৯/২০১১ ইং
১০। আয়তনঃ ১৭.৪০ বর্গ কিঃ মিঃ
১১। লোকসংখ্যাঃ ৮৯৮৩৩জন (পুরুষ-৪৩৯৫৪,মহিলা-৪৫৯০৯) জনসখ্যার ঘনত্ত্ব-৪৭৫১ বঃ.কিঃমিঃ, জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার-৪.৬%।
১২। ওয়ার্ড সংখ্যাঃ ০৯টি
১৩। মহল্লাঃ ১১টি।
১৪। শিক্ষার হারঃ ৮৫%
বেনাপোল কাস্টমসঃ-বেনাপোলে বাংলাদেশের প্রধান এবং সবচেয়ে বড় স্থলবন্দর অবস্থিত। বেনাপোল থেকে পশ্চিমবঙ্গের কলকাতার দূরত্ব মাত্র ৮০ কিলোমিটার।বাংলাদেশের প্রধান স্থলবন্দর বেনাপোল বাংলাদেশের যশোর জেলার শার্শা উপজেলার একটি গুরুত্বপূর্ণ স্থান। এটি বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যকার স্থল বাণিজ্যের প্রধান কেন্দ্র হিসেবে পরিচিত। এই বন্দরের মাধ্যমে দুই দেশের মধ্যে অসংখ্য পণ্য আমদানি-রপ্তানি হয়। বাণিজ্যিক পণ্য: বেনাপোল স্থলবন্দর বাংলাদেশের একটি গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্যিক স্থাপনা, যা ভারতের সাথে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যের জন্য একটি প্রধান প্রবেশদ্বার। এই বন্দর দিয়ে বিভিন্ন ধরনের পণ্য আমদানি ও রপ্তানি করা হয়।
প্রধান আমদানি পণ্য:শিল্প কাঁচামাল: বেনাপোল দিয়ে বিভিন্ন শিল্প কারখানায় ব্যবহৃত কাঁচামাল আমদানি করা হয়, যেমন:সিনথেটিক ফাইভার,রাসায়নিক পদার্থ, মেশিনারি ও যন্ত্রাংশ ইলেকট্রনিক যন্ত্রাংশ
খাদ্যদ্রব্য:কাঁচা মরিচ,টমেটো,মাছ (রুই, কাতলা), বিভিন্ন রকম ফল,শাকসবজি,আলু,পিয়াজ,রসুন,চাল,গম ইত্যাদি ।
তৈরি পোশাক: ভারত থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করা হয় এছাড়াও সিনথেটিক, ফেব্রিক্স,বিভিন্ন প্রকার কাপড় আমদানি করা হয়।
অন্যান্য: গাড়ির চেসিস, কাগজ, কাঠ,জুতার সোল,জুতা, ওষুধ ইত্যাদি।

রপ্তানি পন্যঃ-পাট ও পাটজাত পণ্য: বাংলাদেশের প্রধান রপ্তানি পণ্যের মধ্যে পাট ও পাটজাত পণ্য অন্যতম।
তৈরি পোশাক: বাংলাদেশের তৈরি পোশাক বিশ্বব্যাপী রপ্তানি করা হয় এবং বেনাপোলও এর একটি গুরুত্বপূর্ণ রুট।
মাছ: বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থান থেকে ধরা মাছ ভারতে রপ্তানি করা হয়।
সিলিন্ডার: গ্যাস সিলিন্ডার ভারতে রপ্তানি করা হয়।
জুতা: বাংলাদেশি তৈরি জুতা ভারতে রপ্তানি করা হয়।
আরেকা বাদাম: বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চল থেকে উৎপাদিত আরেকা বাদাম ভারতে রপ্তানি করা হয়।
বাণিজ্যের উপর প্রভাব রাখা বিষয়সমূহ:
দুই দেশের মধ্যে রাজনৈতিক সম্পর্ক: দুই দেশের মধ্যে রাজনৈতিক সম্পর্কের উন্নতি বা অবনতি বাণিজ্যের উপর সরাসরি প্রভাব ফেলে।
পরিবহন ব্যবস্থা: বেনাপোল বন্দরের পরিবহন ব্যবস্থা, যেমন সড়ক, রেল ইত্যাদি, বাণিজ্যের সুচারু পরিচালনায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
কাস্টমস বিধি-নিয়ম: দুই দেশের কাস্টমস বিধি-নিয়ম বাণিজ্যের উপর প্রভাব ফেলে।
মৌসুমি পরিবর্তন: মৌসুমি পরিবর্তনের কারণে কৃষি পণ্যের আমদানি-রপ্তানি পরিমাণে পরিবর্তন আসতে পারে।

বেনাপোলের গুরুত্বঃ-
বাণিজ্যিক কেন্দ্র: বেনাপোল স্থলবন্দর বাংলাদেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। দেশের মোট স্থলবাণিজ্যের একটি বড় অংশ এই বন্দরের মাধ্যমে হয়।

রোজগার সৃষ্টি: বন্দরের কার্যক্রমের সাথে জড়িত হাজার হাজার মানুষের জন্য এটি রোজগারের একটি প্রধান উৎস।
সামাজিক উন্নয়ন: বন্দরের কার্যক্রমের ফলে বেনাপোল ও আশপাশের এলাকার সামাজিক ও অর্থনৈতিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।

বেনাপোলের সরকারি প্রতিষ্ঠানঃ
বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ:এই কর্তৃপক্ষ বেনাপোল স্থলবন্দরসহ দেশের অন্যান্য স্থলবন্দরের পরিচালনা ও উন্নয়নের দায়িত্বে নিয়োজিত।
বেনাপোল কাস্টম হাউস: বন্দরের শুল্ক কার্যক্রম পরিচালনার দায়িত্বে নিয়োজিত। বেনাপোল স্থল বন্দর স্থল কাস্টমস স্টেশন হিসাবে প্রতিষ্ঠিত হয়। পরে ১৯৮৪ সালে এ বন্দরটি কাস্টমস বিভাগে পরিণত হয়। এটি ১৯৯৭ সালে একটি কাস্টম হাউসে রূপান্তরিত হয় এবং ২০০৯ সালে নতুন অবস্থানে ভবন নির্মাণ করা হয়। বেনাপোল কাস্টমস এবং ইমিগ্রেশন চেক পোস্ট তারপর থেকে তার কার্যক্রম শুরু করে।
ফায়ার সার্ভিস স্টেশন,বেনাপোল চেকপোস্টে আন্তর্জাতিক পেসেন্জার টার্মিনাল,বর্ডার ইমিগ্রেশন-কাস্টমস ভবন, বেনাপোল পৌর বাস টার্মিনাল,কার্গো ভেহিকেল টার্মিনাল,বেনাপোল পৌর ট্রাক টার্মিনাল ।
স্থানীয় প্রশাসন:- যশোর জেলা প্রশাসন ও শার্শা উপজেলা প্রশাসন বেনাপোলের আইন-শৃঙ্খলা ও অন্যান্য প্রশাসনিক কার্যক্রম পরিচালনা করে।

বেনাপোলের আয়তন ও অন্যান্য তথ্য ভৌগোলিক অবস্থান: যশোর জেলার শার্শা উপজেলার ছোট ও বড় আঁভূ,বেনাপোল মৌজায় অবস্থিত।

ভারতের সঙ্গে সীমান্ত:- বেনাপোলের বিপরীতে ভারতের পেট্রাপোল স্থলবন্দর অবস্থিত।বেনাপোলের অপরপাশে পেট্রাপোল স্থলবন্দর পশ্চিমবঙ্গের বনগাঁ মহকুমার অন্তর্ভুক্ত।

পরিবহন:- বেনাপোলে রেল ও সড়ক পরিবহনের সুবিধা রয়েছে।রাজধানী ঢাকার সাথে সহজ যোগাযোগ এর জন্য, বেনাপোল থেকে নিয়মিত চলাচল করে “বেনাপোল এক্সপ্রেস” নামে ট্রেন,খুলনা টু কলকাতা পাসপোর্ট যাত্রীদের জন্য বন্ধন ট্রেন চলাচল করে থাকে যা বর্তমানে বন্ধ আছে ।এছাড়াও নিয়মিত ঢাকা টু কলকাতা বাস চলাচল করে শ্যামলী এন,আর,রয়েল কোচ,গ্রীনলাইন ও মৈত্রী সোহার্দ্য।

শিক্ষাঙ্গনঃ-মাধ্যমিক বিদ্যালয়ঃ বেনাপোল মাধ্যমিক বিদ্যালয় ১৮৮৭ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। প্রতিষ্ঠার পর থেকেই এই বিদ্যালয়টি অঞ্চলের শিক্ষার ক্ষেত্রে একটি উজ্জ্বল উদাহরণ হিসেবে দাঁড়িয়ে আছে। বিদ্যালয়টিতে বিভিন্ন শ্রেণির শিক্ষার্থীরা অধ্যয়নরত এবং প্রতি বছর শত শত শিক্ষার্থী ভর্তি হয়ে থাকে।

ডিগ্রি কলেজঃ-বেনাপোলে অবস্থিত ডিগ্রি কলেজের ইতিহাস ও বর্তমান অবস্থাঃবেনাপোল ডিগ্রি কলেজ ১৯৯৭ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। প্রতিষ্ঠার পর থেকেই এই কলেজটি শিক্ষার ক্ষেত্রে একটি উজ্জ্বল উদাহরণ হিসেবে দাঁড়িয়ে আছে। কলেজটিতে বিভিন্ন বিষয়ে অনার্স কোর্স চালু রয়েছে এবং প্রতি বছর শত শত শিক্ষার্থী ভর্তি হয়ে থাকে।
এছাড়াও প্রাথমিক বিদ্যালয়,কিন্ডারগার্ডেন রয়েছে।
দর্শনীয় স্থানঃ-বেনাপোল পৌর গেট,বেনাপোল বর্ডারে নোমান্স ল্যান্ড গেট,পেচোর বাওড়,বাহাদুরপুর বাওড়(মেন্দের টেক),সজনের ঘেড়(পিকনিক স্পট),কনেদার হাওড়,সনাতন ধর্মিয়দের জন্য রয়েছে পাটবাড়ী আশ্রম ইত্যাদি।
আবাসিক হোটেল আছে প্রায় ২০টি, সরকারি পর্যটন মোটেল ১টি,খাওয়ার হোটেল ছোট বড় মিলিয়ে প্রায় ১০০টি।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category

ফেসবুকে আমরা