• মঙ্গলবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৫, ১১:৫১ অপরাহ্ন
শিরোনাম
বিপিএম পদক পাচ্ছেন সিএমপি কমিশনার হাসিব আজিজ পুলিশ সপ্তাহ-২০২৫ এ “বাংলাদেশ পুলিশ পদক (বিপিএম)” পদকের জন্য মনোনীত হলেন সিএমপি কমিশনার  পরিস্থিতি মোকাবিলায় মোদিকে আহ্বান কংগ্রেস সভাপতির : কাশ্মীর হামলা  ইসরায়েলের বিরুদ্ধে আইসিজে’তে শুনানি : গাজায় ত্রাণ প্রবেশে বাধা ভারতের কাশ্মীরে আক্রমণ মোকাবেলায় পাকিস্তানের প্রস্তুতি বন্দর বিস্ফোরণের জন্য দায়ী ‘গাফিলতি’ : ইরানের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মন্ত্রী আফ্রিদি দোষারোপ মানতে পারছেন না  অসমাপ্ত ফাইনাল আজ : ফেডারেশন কাপের  দর্শক শূন্যতায় মলিন গ্যালারি, চট্টগ্রাম টেস্ট : ফ্রিতেও আগ্রহ নেই সাহস, দক্ষতা ও মানবিক পুলিশিংয়ের স্বীকৃতি আইজি পি ব্যাজ পেলেন- ওসি আফতাব উদ্দিন

তামিম এখন কেমন আছেন 

খেলাধুলা ডেস্ক / ১৪ Time View
Update : মঙ্গলবার, ২৫ মার্চ, ২০২৫

গতকাল থেকেই কঠিন সময় পার করছেন তামিম ইকবাল এবং তার পরিবার ও ঘনিষ্ঠজনেরা। উদ্বেগের বাইরে নেই দেশ-বিদেশে থাকা তার লক্ষ-কোটি ভক্ত-সমর্থকরাও। হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ার ২৪ ঘণ্টা পেরিয়ে যাওয়ার পরও সবার মনে তাই এখনও একটাই প্রশ্ন, কেমন আছেন তামিম?

পরিবারের ঘণিষ্ঠজন এবং বিভিন্ন বিশ্বস্থ সূত্র থেকে জানা যাচ্ছে, তামিম এখন অনেকটাই ভালো আছেন। পরিবারের সঙ্গে কথা বলছেন, হাসছেন, মজাও করছেন। তবে ডাক্তারদের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, তামিম উন্নতির দিকে থাকলেও এখনও পুরোপুরি শঙ্কামুক্ত নন।

মঙ্গলবার সকালে সিসিইউ থেকে বের হয়ে উপস্থিত সংবাদকর্মীদের কিছুটা স্বস্তির খবর দেন তামিমের হার্টে স্টেন্ট বসানোর প্রক্রিয়ার তত্ত্বাবধানে থাকা চিকিৎসক মনিরুজ্জামান মারুফ।

“তামিম এখন ভালো আছেন। ভালো ব্যাপার হলো, তিনি অল্প অল্প হাঁটাচলা করছেন, হাসিখুশি আছেন। অল্প কিছুক্ষণের জন্য তাকে কেবিনে দেওয়া হয়েছিল। পরিবারের সঙ্গে দেখা করে আবার সিসিইউতে নেওয়া হয়েছে।”

এখনও পর্যবেক্ষনেই আছেন তামিম। তবে সোমবার সকাল থেকে তাকে নিয়ে যে ঝড় বয়ে গেছে সেই তুলনায় এখন স্বস্তির শ্বাস ফেলাই যায়। সার্বিক বিবেচনায় বলা যায়, আল্লাহপাকের অশেষ রহমত এবং অসুস্থ হয়ে পড়ার পর থেকে প্রতিটা পদক্ষেপে যে মানুষগুলো ছিলেন তাদের সঠিক ও কার্যকর সিদ্ধান্তর কারণেই তামিমকে মৃত্যুর দুয়ার থেকে ফেরানো সম্ভব হয়েছে।

এই মানুষগুলোর মধ্যে যেমন ছিলেন ডাক্তারদের দল, তেমনই তেমনি মোহামেডানের ট্রেনার, বিকেএসপির চিকিৎসক থেকে শুরু করে অ্যাম্বুলেন্সের ড্রাইভার, ম্যাচ রেফারি, সবাই দারুণ আন্তরিকতা, অসাধারণ দক্ষতার পরিচয় দিয়েছেন। যে কারণে সকলের প্রতিই কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন তামিমের পরিবার।

সাভারে বিকেএসপির তিন নম্বর মাঠে ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে শাইনপুকুর স্পোর্টিং ক্লাবের বিপক্ষে টস করতে নেমেছিলেন মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাবের অধিনায়ক তামিম। ড্রেসিংরুমে ফিরে অস্বস্তি অনুভব করেন। ফিল্ডিং করেন এক ওভার। সবার পরামর্শে যান পাশেই কেপিজে হাসপাতালে।

প্রাথমিকভাবে কোনো সমস্যা ধরা পড়েনি। তবে তামিম চেয়েছিলেন ঢাকার এভারকেয়ার হাসপাতালে গিয়ে সবকিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষা করাবেন। সেই মোতাবেক নিজেই হেলিকপ্টারের ব্যবস্থা করেন। হেলিকপ্টার চলেও আসে বিকেএসপির মাঠে। কিন্তু তাতে চড়ার আগেই হঠাৎই অবস্থা মারাত্মক খারাপের দিকে মোড় নেয়। অচেতন হয়ে পড়া তামিমের মুখ দিয়ে ফেনাও বের হতে শুরু করে। তামিমকে নিয়ে তখন আক্ষরিক অর্থেই চলছে যমে-মানুষে টানাটানি।

তখন সবার পরামর্শে আবার তামিমকে নেওয়া হয় কেপিজে হাসপাতালে। ঝড়ের বেগে তাকে হাসপাতালে নিয়ে আসেন অ্যাম্বুলেন্স ড্রাইভার। প্রতিটি মিনিট যখন মহামূল্য তখন চালকের এমন ভূমিকার চিকিৎসকরা ও সেখানে উপস্থিত সবাই দারুণ প্রশংসা করেছেন।

আর পথিমধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কাজটি করেছেন মোহামেডানে ট্রেনার ইয়াকুব চৌধুরি ডালিম। তিনি টানা সিপিআর দিয়ে গেছেন তামিমকে, বুকে পাঞ্চ করেছেন বারবার। সামাজিক মাধ্যমে তিনি লিখেছেন, ২৫০-৩০০ সিপিআর চেস্ট কমপ্রেশন করার পর তামিমের নিথর দেহে একটু সাড়া মেলে। এক পর্যায়ে তামিমের মুখ দিয়ে যখন ফেনা পড়তে শুরু করে, তখন তিনি ‘মাউথ টু মাউথ রিসাসিটেশন’ দিয়ে গেছেন ক্রমাগত।

কেপিজে হাসপাতালের চিকিৎসক পরে তামিমের পরিবারের সদস্যদেরকে বলেছেন, ডালিম ওই কাজগুলি নিখুঁতভাবে করতে না পারলে তামিমকে বাঁচানো যেত না।

হাসপাতালের সঙ্গে যোগাযোগ রাখা হচ্ছিল। যে কারণে চিকিৎসক দল নিচেই অপেক্ষা করছিলেন। এরপর দ্রুত নিয়ে যাওয়া হয় ভেতরে। তারপর তো এনজিওগ্রাম করিয়ে, হার্টে রিং পরানো হলো। হার্টে রিং পরানোর সিদ্ধান্ত দেন তার বড়ভাই নাফিস ইকবাল।

হৃৎরোগবিশেষজ্ঞ ডা. মনিরুজ্জামান মারুফ ও সেখানকার প্রশিক্ষিত দল দ্রুততম সময়ে দারুণ দক্ষতায় এনজিওগ্রাম, এনজিওপ্লাস্টি ও স্টেন্টিং সম্পন্ন করতে পেরেছেন। পরে তামিমের ব্যাপারে খোঁজ নিতে যান জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউটের অভিজ্ঞ ও সিনিয়র একজন অধ্যাপক। সবকিছু জেনে, শুনে ও খতিয়ে দেখে পরে তিনি ডা. মনিরুজ্জামানকে বলেছেন, “তুমি ও তোমার দল যা করেছো, সেটাকে মিরাকল বললেও কম বলা হয়…।”

তামিমের বাবা মারা যান ২০০০ সালে, হৃদরোগে আক্রান্ত হয়েই। যে কারণে তামিমকে নিয়ে ছিল বেশি ভয়। তবে শেষ পর্যন্ত সেই ভয় অনেকটা কাটিয়ে ওঠা গেছে বলেও মনে হচ্ছে। এখর পুরোপুরি সুস্থ হয়ে ফেরার পালা। সেই অক্ষোতেই আছেন সবাই।

 


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category

ফেসবুকে আমরা