আপনার প্রজনন সুস্থতা ঠিক যেমন শরীরে অন্যান্য অঙ্গপ্রত্যঙ্গের, তেমনি খাদ্যাভ্যাস ও পুষ্টি সরাসরি প্রভাব ফেলে। নিচে এমন ১৩টি খাবার তুলে ধরা হলো, যেগুলো নিয়মিত খেলে পুরুষদের মধ্যে শুক্রাণুর সংখ্যা, গুণমান এবং গতিশীলতা বৃদ্ধিতে সহায়ক হতে পারে।
১. ডিম
ডিম প্রোটিন ও বিভিন্ন ভিটামিনে সমৃদ্ধ। এটি শুক্রাণু গঠনে সহায়তা করে এবং তাদের গতিশীলতা বাড়াতে ভূমিকা রাখে। পাশাপাশি, ফ্রি র্যাডিক্যাল ক্ষতিকারক প্রভাব থেকে শুক্রাণুকে রক্ষা করে।
২. ঝিনুক
দস্তা (জিঙ্ক) সমৃদ্ধ এই শামুক জাতীয় খাদ্যটি টেস্টোস্টেরন উৎপাদন এবং সুস্থ শুক্রাণুর বৃদ্ধিতে সহায়ক।
৩. গোজি বেরি
গোজি বেরি নিয়মিত খেলে শুক্রাণুর সংখ্যা উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়ে — গবেষণায় দেখা গেছে এক মাসে পুরুষদের মধ্যে শুক্রাণু সংখ্যা প্রায় ৫০% বৃদ্ধি পেতে পারে।
৪. রসুন
রসুনে সেলেনিয়াম ও ভিটামিন B6 উপস্থিত থাকে, যা শুক্রাণুর সৃষ্টিতে সহায়ক। এছাড়া এটি অণ্ডকোষে রক্ত সঞ্চালন বাড়ানোর মাধ্যমে পুষ্টি উপাদান পৌঁছাতে সহায়তা করে।
৫. অ্যাসপারাগাস
অ্যাসপারাগাস ভিটামিন C-র ভালো উৎস। এটি ফ্রি র্যাডিক্যালের বিরূদ্ধে লড়ে এবং শুক্রাণুর গুণমান রক্ষা করে।
৬. আখরোট
এই বাদামে উচ্চমানের স্বাস্থ্যকর চর্বি ও ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড থাকে, যা কোষের ঝিল্লি গঠন ও রক্ত সঞ্চালনে ভূমিকা রেখে শুক্রাণু বৃদ্ধিতে সহায়তা করে।
৭. ম্যাকা রুট
ম্যাকা (Lepidium meyenii) দীর্ঘকাল ধরে যৌন উদ্দীপনা বাড়াতে ব্যবহার হয়ে আসছে। এটি বীর্য নামমাত্র ও গুণমান উন্নয়নে প্রভাব ফেলতে পারে।
৮. কলা
কলায় ভিটামিন A, B1, C ও ম্যাগনেসিয়াম আছে, যা শুক্রাণুর গঠন ও গতিশীলতা উন্নত করতে সহায়ক।
৯. মাছ
স্যামন, ম্যাকেরেল, কড, সারডিন ইত্যাদি মাছ ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিডে ধনী। যারা নিরামিষভোজী, তারা চিয়া বীজ বা অন্যান্য ওমেগা-৩ সমৃদ্ধ খাবার যুক্ত করতে পারেন।
১০. ডার্ক চকোলেট
ডার্ক চকোলেটে এল-আর্জিনাইন নামে একটি উপাদান থাকে, যা শুক্রাণুর সংখ্যা ও গুণমান উন্নত করতে পারে। দুধ চকোলেটের পরিবর্তে ডার্ক চকোলেট বেছে নিতে উৎসাহ দেওয়া হয়।
১১. কুমড়োর বীজ
কুমড়োর বীজে জিঙ্ক ও ফাইটোস্টেরল থাকে, যা টেস্টোস্টেরন মাত্রা ও শুক্রাণুর কার্যকারিতা বাড়াতে সহায়ক।
১২. পালং শাক
সবুজ শাক-সবজি যেমন পালং শাক ফলিক অ্যাসিডে ধনী, যা অস্বাভাবিক শুক্রাণুর সংখ্যা কমিয়ে গঠনযোগ্য শুক্রাণুর সংখ্যা বাড়ায়।
১৩. অন্যান্য সবুজ শাক ও ফল
সাইট্রাস ফল, গাজর, অন্যান্য সবুজ শাক ও রস যেমন টমেটো, তরমুজ ও শসার রস — এগুলো মিলিয়ে দৃষ্টিগোচর প্রভাব তৈরি করতে পারে।
ভিটামিন ও রস যা সহায়ক হতে পারে
ভিটামিন D — এটি টেস্টোস্টেরন মাত্রা বৃদ্ধি করতে সহায়ক বলে ধরা হয়।
ভিটামিন C — শুক্রাণুর উত্পাদন ও গতিশীলতা বৃদ্ধিতে ভূমিকা রাখে।
টমেটো রস — নিয়মিত পানের ক্ষেত্রে শুক্রাণুর গতিশীলতা বৃদ্ধিতে সহায়ক হতে পারে।
তরমুজ ও শসার রস — তরমুজে সিট্রুলাইন থাকে, যা রক্তনালী শিথিল করতে সহায়তা করে; শসায় অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকে যা শুক্রাণুর উপকারে আসে।
এই তালিকাভুক্ত খাবারগুলি এককভাবে যাদুকরী সমাধান নয়, তবে সঠিকভাবে সংযোজন করলে আপনার খাদ্যতালিকা এবং পুষ্টি বৈশিষ্ট্যকে আরও শক্তিশালী করতে পারে। যদি আপনার শুক্রাণু বিষয়ক কোনো সমস্যা বা বিশেষ স্বাস্থ্য অবস্থান থাকে, তাহলে খাদ্য পরিবর্তনের আগে একজন যোগ্য চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়াই উত্তম।