অসুস্থ প্রতিবেশীকে সাহায্য করতে গিয়ে হেনস্থার শিকার হয়েছেন এক যুবক এবং ব্ল্যাকমেইলের শিকার হয়েছেন ভুক্তভোগী শিমু খাতুন (৩৮)। ঘটনাটি ঘটেছে সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়া উপজেলার পঞ্চক্রোশী ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ড শাহজাহানপুর এলাকায়। গত ২৩ তারিখ রাত দশটার দিকে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন ভুক্তভোগী শিমু খাতুন। মায়ের সুস্থতার জন্য মাথায় পানি ঢালেন ছেলে আলিফ (১৭)। অবস্থার উন্নতি না হওয়ায় প্রতিবেশি চাচা মওলার সহযোগিতা নেন। এই ঘটনাটি স্থানীয় কয়েকজন যুবক ভিডিও করেন এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার দেওয়ার হুমকি দেন ভুক্তভোগী শিমু খাতুনকে। উক্ত ঘটনাকে কেন্দ্র করে এলাকায় চাঞ্চলের সৃষ্টি হয়েছে। ভুক্তভোগী শিমু খাতুন বলেন, আমরা গরীব মানুষ, আমি দোকান চালাই আর আমার স্বামী ঢাকায় গার্মেন্টসে চাকুরী করে সংসার চালায়। আমি গত ২৩ তারিখ রাতে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়লে আমার ছেলে আলিফ বিচলিত হয়ে পড়ে। ঐ সময় প্রতিবেশী মওলা আমার দোকানে আসে। আমার অসুস্থতার বিষয়টি প্রতিবেশী মওলাকে জানালে তিনি সহযোগিতার জন্য আমার বাসায় আসেন। তখন স্থানীয় যুবক মো: নাছিম (২২) পিতা. বাবুল হোসেন, মো: মামুন সরকার (৫০) পিতা. মজিবুর মাস্টার, মো: নোমান (২১) পিতা. খোকন সরকার অতর্কিতভাবে আমার বাড়িতে প্রবেশ করে আমাদেরকে অবরুদ্ধ করে রাখে। আমরা অনৈতিক কাজ করছি তার ভিডিও ধারণ করেছে এই বলে অনেক গালাগালি করে এবং চাঁদা দাবি করে। আমার সন্তান আলিফ কে মারধর করে। আমরা ভীত সন্ত্রস্ত হয়ে আমার দোকান থেকে ২০০০ টাকা তাদের দিয়ে দেই। পরে তারা গোলাম মওলাকে ছেড়ে দেয় এবং আমাদেরকে বিভিন্নভাবে ভয়ভীতি দেখিয়ে আরো টাকা চাঁদা দাবি করে। পরে আমরা বাঁচার জন্য উল্লাপাড়া থানায় অভিযোগ দায়ের করি। ভুক্তভোগীর ছেলে আলিফ বলেন, এই ঘটনায় আমাকে তারা মারধর করে এবং আমার মা কে অসম্মান করার ভয় দেখান। মওলা চাচার সাথে পূর্ব শত্রুতা থাকায় তার সাথে আমার মা কে জড়িয়ে অসম্মান করার চেষ্টা করছেন। ঘটনা দু-দিন পর আমাদের ফোন দিয়ে টাকা দাবি করছেন। এমনকি টাকা না দিলে প্রাণে মেরে ফেলবে না হয় গ্রাম থেকে তারিয়ে দেয়ার হুমকিও দিচ্ছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ব্যক্তি বলেন, বিষয়টি আমরা শুনেছি এবং বাবুলের ছেলে নাছিম আর শিমু কল রেকর্ড শুনলাম। সেখানে নাছিম শিমু কাছ থেকে টাকা চাইতেছে। বিষয়টি খুব খারাপ করেছে। গরীব মানুষ দোকান চালিয়ে ছেলে মেয়েদের লেখাপড়া করায় তাদের সাথে এমন করা ঠিক হয়নি। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আরেক ব্যক্তি জানান, গোলাম মওলার সাথে ব্যক্তিগত শত্রুতা থাকায় ইউপি সদস্য মোস্তাক আহমেদ মোহনের (৪৪) ইন্ধনে এই ঘটনা ঘটে। ঘটনার সাথে জরিত নোমান, নাছিম জিয়া খুবই উশৃংঙ্খল প্রকৃতির। এরা মোহন মেম্বারের ছাত্র ছায়ায় নানা রকম অপকর্ম করে বেড়ায়। ভুক্তভোগীর বোন রাশিদা বলেন, এই ঘটনায় আমার অসুস্থ বোন আরো অসুস্থ হয়ে পরছে। আসামিরা প্রতিনিয়তই বিভিন্ন হুমকি দিচ্ছে। আমার বোন এখানে প্রাণনাশের আশঙ্কায় ভুগছে। এই ঘটনার কঠিনতম শাস্তি চাই। ইউপি সদস্য মোহনের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন এই ঘটনার সাথে আমি কোনভাবেই যুক্ত নই বলে লাইন কেটে দেন। এই বিষয়ে উল্লাপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বলেন, অভিযোগ পেয়েছি তদন্ত চলছে সত্যতা পেলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।