নিজস্ব প্রতিবেদক, কক্সবাজার:
কক্সবাজারে বুধবার (৫ নভেম্বর) সকালে দুই পৃথক ঘটনায় মোট ছয়জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে টেকনাফে এক সাবেক ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) সদস্যকে হত্যার অভিযোগ পাওয়া গেছে এবং চকরিয়ায় ভয়াবহ সড়ক দুর্ঘটনায় একই পরিবারের পাঁচজন প্রাণ হারিয়েছেন।
টেকনাফ উপজেলার হ্নীলা ইউনিয়নের রঙিখালী এলাকার একটি ব্রিজের নিচ থেকে সাবরাং ইউপির সাবেক সদস্য ইউনুস সিকদার (৪২)-এর মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। বুধবার সকাল আটটার দিকে মরদেহটি উদ্ধার করা হয়। নিহত ইউনুস সিকদার সাবরাং ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের প্রয়াত মোহাম্মদ কাশেমের ছেলে এবং আরাফাত রহমান কোকো ক্রীড়া সংসদ টেকনাফ উপজেলা শাখার সভাপতি ছিলেন।
পরিবারের দাবি, সংগঠনের সদস্য সচিব মো. আলমের বাড়িতে ইউনুসকে আটকে রেখে হত্যা করা হয়েছে। পরে মরদেহ ফেলে দেওয়া হয়।
টেকনাফ মডেল থানার ওসি আবু জায়েদ মোহাম্মদ নাজমুন নূর বলেন, “প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, টাকার লেনদেন নিয়ে পরিকল্পিতভাবে ইউনুস সিকদারকে হত্যা করা হয়েছে। লাশ ময়নাতদন্তের জন্য কক্সবাজার সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে, মামলার প্রস্তুতি চলছে।”
তিনি আরও জানান, রঙিখালী এলাকা দীর্ঘদিন ধরে মাদক ও সন্ত্রাসী কার্যক্রমের জন্য কুখ্যাত। হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদ্ঘাটনে পুলিশ কাজ করছে।
স্থানীয় এক জনপ্রতিনিধি ও এক বাসিন্দা জানান, ইয়াবা ব্যবসার ৯০ লাখ টাকা লেনদেন নিয়ে বিরোধের জেরেই হত্যাকাণ্ডটি ঘটেছে। মঙ্গলবার রাতে ওই টাকার বিষয়েই ইউনুস রঙিখালীতে গিয়েছিলেন বলে জানা গেছে।
ঘটনার পর কক্সবাজার জেলা বিএনপির সভাপতি ও উখিয়া–টেকনাফ আসনের বিএনপি প্রার্থী শাহজাহান চৌধুরী নিহতের পরিবারের সঙ্গে দেখা করে হত্যার সুষ্ঠু তদন্ত দাবি করেন।
এর আগে সকাল সাড়ে ৯টার দিকে চকরিয়া উপজেলার ফাঁসিয়াখালী এলাকায় চট্টগ্রাম–কক্সবাজার মহাসড়কে যাত্রীবাহী একটি মারছা বাসের সঙ্গে মাইক্রোবাসের মুখোমুখি সংঘর্ষে একই পরিবারের পাঁচজন নিহত হন।
চকরিয়া থানার ওসি তৌহিদুল আনোয়ার জানান, ঘটনাস্থলেই দুইজন মারা যান এবং হাসপাতালে নেওয়ার পর আরও তিনজনের মৃত্যু হয়। নিহতরা সবাই কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান আবদুল গফুর পাটোয়ারীর ভাই এনামুল হক পাটোয়ারীর পরিবারের সদস্য।
দুর্ঘটনার খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিস ও পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে উদ্ধার অভিযান পরিচালনা করে। এ ঘটনায় মহাসড়কে কিছু সময়ের জন্য যান চলাচল বন্ধ থাকলেও পরে স্বাভাবিক হয়।
দুই পৃথক ঘটনায় এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও সাধারণ মানুষ দ্রুত ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত এবং দোষীদের বিচারের দাবি জানিয়েছেন।