নিউজিল্যান্ডের ছুঁড়ে দেওয়া ২০৮ রানের টার্গেটে ৯৩ রানে ৬ উইকেট হারিয়ে খাদের কিনারায় পড়ে যায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। তবে সপ্তম ও অষ্টম উইকেট মিলিয়ে ৪২ বলে ১০৯ রান তুলে জয়ের সুযোগ তৈরি করে ক্যারিবীয়রা। কিন্তু শেষ বলে জয়ের জন্য ৫ রানের সমীকরণ মেলাতে না পারায় নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজের দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টিতে তীরে এসে তরি ডুবল ওয়েস্ট ইন্ডিজের। ফলে ক্যারিবীয়দের বিপক্ষে ৩ রানের জয়ে পাঁচ ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজে ১-১ সমতা ফেরাল স্বাগতিক নিউজিল্যান্ড।
অকল্যান্ডে টস হেরে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে ৪৩ বলে ৫৫ রানের সূচনা করেন নিউজিল্যান্ডের দুই ওপেনার টিম রবিনসন ও ডেভন কনওয়ে। তবে ৫৯ রানের মধ্যে বিদায় নেন তারা। কনওয়ে ২৪ বলে ১৬ এবং রবিনসন ২৫ বলে ৩৯ রান করেন।
ওপেনারদের বিদায়ের পর পরের দুই উইকেটে রাচিন রবীন্দ্রকে নিয়ে ২৯ বলে ৪৮ এবং ড্যারিল মিচেলের সাথে ১৮ বলে ৫৭ রানের ঝড়ো জুটি গড়েন মার্ক চাপম্যান। রাচিন ১১ রানে থামলেও, ১৯ বলে টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারের দশম হাফ-সেঞ্চুরি তুলে নেন চাপম্যান।
১৭তম ওভারের প্রথম বলে ওয়েস্ট ইন্ডিজ পেসার জেসন হোল্ডারের শিকার হন চাপম্যান। ৬টি চার ও ৭টি ছক্কায় ২৮ বলে ২৭৮.৫৭ স্ট্রাইক রেটে ৭৮ রান করেন তিনি।
দলীয় ১৬৪ রানে চাপম্যান ফেরার পর ষষ্ঠ উইকেটে ১৭ বলে ৩৮ রানের অবিচ্ছিন্ন জুটিতে নিউজিল্যান্ডকে ২০ ওভারে ৫ উইকেটে ২০৭ রানের সংগ্রহ এনে দেন মিচেল ও অধিনায়ক মিচেল স্যান্টনার। মিচেল ১৪ বলে ২৮ এবং স্যান্টনার ৮ বলে ১৮ রানে অপরাজিত থাকেন। ওয়েস্ট ইন্ডিজ স্পিনার রোস্টন চেজ ২ উইকেট নেন।
২০৮ রানের টার্গেটে ইনিংসের তৃতীয় বলে উইকেট হারায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। খালি হাতে ফিরেন ওপেনার ব্র্যান্ডন কিং। দ্বিতীয় উইকেটে ৪১ বলে ৪৯ রানের জুটিতে শুরুর ধাক্কা সামাল দেন আরেক ওপেনার অ্যালিক আথানাজে ও অধিনায়ক শাই হোপ।
এরপর নিউজিল্যান্ডের দুই স্পিনার স্যান্টনার ও ইশ সোধির ঘূর্ণিতে পড়ে ৯৩ রানে ৬ উইকেট হারিয়ে লড়াই থেকে ছিটকে পড়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। আথানাজেকে ৩৩, আকিম আগস্তেকে ৭ ও হোল্ডারকে ১৬ রানে শিকার করেন সোধি। অপরপ্রান্তে হোপকে ২৪ ও চেজকে ৬ রানে বিদায় দেন স্যান্টনার।
সপ্তম উইকেটে রোমারিও শেফার্ডকে নিয়ে ২৪ বলে ৬২ রানের ঝড়ো জুটিতে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে লড়াইয়ে ফেরান রোভম্যান পাওয়েল। শেফার্ড যখন ফিরেন তখন ৩ উইকেট হাতে নিয়ে ১৯ বলে ৫৩ রান দরকার পড়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজের।
১৮তম ওভারে ২২ এবং ১৯তম ওভারে ১৪ রান তুলে ওয়েস্ট ইন্ডিজের জয়ের সম্ভাবনা জাগান পাওয়েল ও ফোর্ড। শেষ ওভারে ১৬ রান প্রয়োজন পড়ে ক্যারিবীয়দের।
নিউজিল্যান্ড পেসার কাইল জেমিসনের করা শেষ ওভারের প্রথম ৩ বল থেকে ১০ রান তুলে ফেলেন পাওয়েল ও ফোর্ড। চতুর্থ বলে আউট হন পাওয়েল। পঞ্চম বলে নতুন ব্যাটার আকিল হোসেন ১ রান নিলে শেষ ডেলিভারিতে ৫ রান দরকার পড়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজের। কিন্তু শেষ বল থেকে ১ রানের বেশি নিতে পারেননি ফোর্ড। এতে ২০ ওভারে ৮ উইকেটে ২০৪ রান করে হার বরণ করে নেয় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। শেষ ৫ ওভারে টি-টোয়েন্টিতে সর্বোচ্চ ৮৭ রানের রেকর্ড গড়ে ক্যারিবীয়রা।
১টি চার ও ৬টি ছক্কায় ১৬ বলে ২৮১.২৫ স্ট্রাইক রেটে ৪৫ রান করেন পাওয়েল। শেফার্ড ১৬ বলে ৩৪ ও ফোর্ড ১৩ বলে অপরাজিত ২৯ রান করেও দলের হার এড়াতে পারেননি। নিউজিল্যান্ডের সোধি ও স্যান্টনার ৩টি করে উইকেট নেন। ম্যাচ সেরা হন নিউজিল্যান্ডের চাপম্যান।
আগামী ৯ নভেম্বর নেলসনে সিরিজের তৃতীয় টি-টোয়েন্টি খেলবে নিউজিল্যান্ড ও ওয়েস্ট ইন্ডিজ।