ঢাজা ০৮:৫৬ অপরাহ্ন, সোমবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৫, ৮ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে আন্দোলনের মুখে ছয় ডিনের পদত্যাগ

নিজস্ব প্রতিবেদক | রাজশাহী

দিনব্যাপী শিক্ষার্থীদের আন্দোলন, ডিনদের চেম্বারে তালা ও রেজিস্ট্রারকে অবরুদ্ধ করে রাখার ঘটনার মধ্যেই রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) ছয়জন ডিন পদত্যাগ করেছেন। রোববার (২১ ডিসেম্বর) রাত ৮টার দিকে এক বৈঠকে তারা দায়িত্ব পালনে অপারগতা প্রকাশ করেন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দপ্তরের প্রশাসক অধ্যাপক আখতার হোসেন মজুমদার এ তথ্য নিশ্চিত করেন।

তিনি বলেন, “আমরা শিক্ষার্থী ও ডিনদের সঙ্গে আলোচনা করেছি। সেখানে ডিনরা তাদের দায়িত্ব পালন করতে অপারগতা প্রকাশ করেন। এ বিষয়ে সোমবার (২২ ডিসেম্বর) উপাচার্য একটি সিদ্ধান্ত জানাতে পারেন।”

পদত্যাগকারী ছয় ডিন হলেন—
আইন অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. আবু নাসের মো. ওয়াহিদ,
বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. নাসিমা আখতার,
ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. এ এস এম কামরুজ্জামান,
সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. এস এম একরাম উল্লাহ,
প্রকৌশল অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. বিমল কুমার প্রামাণিক
এবং ভূবিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. এএইচএম সেলিম রেজা

সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক এস এম একরাম উল্লাহ বলেন, “আজ কী হয়েছে তা বিস্তারিত জানি না। তবে আমরা দায়িত্ব পালন করতে ইচ্ছুক নই—এ কথা জানিয়ে দিয়েছি।”

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক সালেহ হাসান নকীব–এর সঙ্গে মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি সাড়া দেননি।

এর আগে আওয়ামীপন্থি ছয় ডিনের পদত্যাগ দাবিতে রোববার সকাল ১০টার দিকে শিক্ষার্থীরা ডিনস কমপ্লেক্সে অবস্থান নেন। পরে ডিনস কমপ্লেক্সসহ বিভিন্ন ভবনে অবস্থিত ওই ডিনদের চেম্বারে তালা ঝুলিয়ে দেন তারা। এদিন কোনো ডিন নিজ নিজ বিভাগে ক্লাসে উপস্থিত ছিলেন না।

দুপুর আড়াইটার দিকে শিক্ষার্থীরা রেজিস্ট্রার দপ্তরে গিয়ে তাদের দাবি উত্থাপন করেন। এ সময় শাখা ছাত্রশিবিরের সাধারণ সম্পাদক মুজাহিদ ফয়সাল দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত রেজিস্ট্রার ভবন ত্যাগ না করার ঘোষণা দেন। পরে শিক্ষার্থীরা রেজিস্ট্রার দপ্তরের পাশাপাশি উপ-উপাচার্য ও প্রক্টর দপ্তরেও তালা ঝুলিয়ে দেন।

প্রায় আধা ঘণ্টা পর তালা খুলে দেওয়া হয়। এরপর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য, প্রক্টর এবং জনসংযোগ দপ্তরের প্রশাসক শিক্ষার্থীদের সঙ্গে বৈঠকে বসেন। তবে বৈঠকে কোনো সিদ্ধান্ত না হওয়ায় রাতে আরেকটি সভা ডাকার ঘোষণা দিয়ে বৈঠক শেষ করা হয়।

উল্লেখ্য, ২০২৩ সালের ১৭ ডিসেম্বর রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক সমিতি, ডিন, সিন্ডিকেট, পরিকল্পনা ও উন্নয়ন কমিটি এবং শিক্ষা পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। ১২টি অনুষদের ডিন নির্বাচনের মধ্যে আওয়ামীপন্থি হলুদ প্যানেল থেকে ছয়জন প্রার্থী নির্বাচিত হন। গত বুধবার এসব ডিনের নির্ধারিত মেয়াদ শেষ হয়। তবে নতুন নির্বাচন না হওয়া পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয় আইন অনুযায়ী গত ১১ ডিসেম্বর উপাচার্য তাদের স্বপদে বহাল থাকার নির্দেশ দিয়েছিলেন।

ট্যাগ
জনপ্রিয় সংবাদ

ঢাকা-১০ আসনে মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করলেন আসিফ মাহমুদ সজীব ভুঁইয়া

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে আন্দোলনের মুখে ছয় ডিনের পদত্যাগ

সপ্রকাশিত হয়েছে: ০২:২৪:৫২ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৫

নিজস্ব প্রতিবেদক | রাজশাহী

দিনব্যাপী শিক্ষার্থীদের আন্দোলন, ডিনদের চেম্বারে তালা ও রেজিস্ট্রারকে অবরুদ্ধ করে রাখার ঘটনার মধ্যেই রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) ছয়জন ডিন পদত্যাগ করেছেন। রোববার (২১ ডিসেম্বর) রাত ৮টার দিকে এক বৈঠকে তারা দায়িত্ব পালনে অপারগতা প্রকাশ করেন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দপ্তরের প্রশাসক অধ্যাপক আখতার হোসেন মজুমদার এ তথ্য নিশ্চিত করেন।

তিনি বলেন, “আমরা শিক্ষার্থী ও ডিনদের সঙ্গে আলোচনা করেছি। সেখানে ডিনরা তাদের দায়িত্ব পালন করতে অপারগতা প্রকাশ করেন। এ বিষয়ে সোমবার (২২ ডিসেম্বর) উপাচার্য একটি সিদ্ধান্ত জানাতে পারেন।”

পদত্যাগকারী ছয় ডিন হলেন—
আইন অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. আবু নাসের মো. ওয়াহিদ,
বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. নাসিমা আখতার,
ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. এ এস এম কামরুজ্জামান,
সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. এস এম একরাম উল্লাহ,
প্রকৌশল অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. বিমল কুমার প্রামাণিক
এবং ভূবিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. এএইচএম সেলিম রেজা

সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক এস এম একরাম উল্লাহ বলেন, “আজ কী হয়েছে তা বিস্তারিত জানি না। তবে আমরা দায়িত্ব পালন করতে ইচ্ছুক নই—এ কথা জানিয়ে দিয়েছি।”

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক সালেহ হাসান নকীব–এর সঙ্গে মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি সাড়া দেননি।

এর আগে আওয়ামীপন্থি ছয় ডিনের পদত্যাগ দাবিতে রোববার সকাল ১০টার দিকে শিক্ষার্থীরা ডিনস কমপ্লেক্সে অবস্থান নেন। পরে ডিনস কমপ্লেক্সসহ বিভিন্ন ভবনে অবস্থিত ওই ডিনদের চেম্বারে তালা ঝুলিয়ে দেন তারা। এদিন কোনো ডিন নিজ নিজ বিভাগে ক্লাসে উপস্থিত ছিলেন না।

দুপুর আড়াইটার দিকে শিক্ষার্থীরা রেজিস্ট্রার দপ্তরে গিয়ে তাদের দাবি উত্থাপন করেন। এ সময় শাখা ছাত্রশিবিরের সাধারণ সম্পাদক মুজাহিদ ফয়সাল দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত রেজিস্ট্রার ভবন ত্যাগ না করার ঘোষণা দেন। পরে শিক্ষার্থীরা রেজিস্ট্রার দপ্তরের পাশাপাশি উপ-উপাচার্য ও প্রক্টর দপ্তরেও তালা ঝুলিয়ে দেন।

প্রায় আধা ঘণ্টা পর তালা খুলে দেওয়া হয়। এরপর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য, প্রক্টর এবং জনসংযোগ দপ্তরের প্রশাসক শিক্ষার্থীদের সঙ্গে বৈঠকে বসেন। তবে বৈঠকে কোনো সিদ্ধান্ত না হওয়ায় রাতে আরেকটি সভা ডাকার ঘোষণা দিয়ে বৈঠক শেষ করা হয়।

উল্লেখ্য, ২০২৩ সালের ১৭ ডিসেম্বর রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক সমিতি, ডিন, সিন্ডিকেট, পরিকল্পনা ও উন্নয়ন কমিটি এবং শিক্ষা পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। ১২টি অনুষদের ডিন নির্বাচনের মধ্যে আওয়ামীপন্থি হলুদ প্যানেল থেকে ছয়জন প্রার্থী নির্বাচিত হন। গত বুধবার এসব ডিনের নির্ধারিত মেয়াদ শেষ হয়। তবে নতুন নির্বাচন না হওয়া পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয় আইন অনুযায়ী গত ১১ ডিসেম্বর উপাচার্য তাদের স্বপদে বহাল থাকার নির্দেশ দিয়েছিলেন।