• রবিবার, ০৭ ডিসেম্বর ২০২৫, ১০:৪০ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম
চলতি মাসে সরকারি কর্মজীবীদের টানা ৩ দিনের ছুটি চৌদ্দগ্রামে ছাতিয়ানী এবতেদায়ী মাদ্রাসায় বার্ষিক পুরস্কার, বিদায়ী সংবর্ধনা ও অভিভাবক সমাবেশ অনুষ্ঠিত গাজীপুরে গেস্ট হাউজের ম্যানেজার নিখোঁজ, লাখাধিক টাকাসহ গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্র চুরি ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ইসি সম্পূর্ণ প্রস্তুত: সচিব আখতার আহমেদ বেগম খালেদা জিয়ার চিকিৎসায় সব ধরনের সহযোগিতা করছে সরকার : প্রেস সচিব ‘১০ ভোট পেলেও আমরা একাই নির্বাচন করব’ : এনসিপি গণঅধিকার পরিষদ ৩০০ আসনে প্রার্থী দেবে : নুর খালেদা জিয়ার অসুস্থতায় গভীর উদ্বেগ : মির্জা আব্বাস খালেদা জিয়াকে দেখতে এভারকেয়ারে পুত্রবধূ জুবাইদা রহমান দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ভালো রাখতে সরকার সর্বোচ্চ সর্তক অবস্থানে রয়েছে : মো. তৌহিদ হোসেন

রিজার্ভ থেকে চুরি হওয়া অর্থ দ্রুত ফেরত পেতে আশাবাদী বাংলাদেশ ব্যাংক : (আরসিবিসি)

অর্থনৈতিক রিপোর্টার / ৪৬ Time View
Update : সোমবার, ৬ অক্টোবর, ২০২৫

রিজার্ভ থেকে চুরি হওয়া অর্থ দ্রুত ফেরত পাওয়ার ব্যাপারে আশাবাদী বাংলাদেশ ব্যাংক। চুরি হওয়া অর্থ পুনরুদ্ধারের জন্য ফিলিপাইনের রিজাল কমার্শিয়াল ব্যাংকিং কর্পোরেশনের (আরসিবিসি)-সঙ্গে একটি সালিশ প্রক্রিয়া চালিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

বাংলাদেশ ব্যাংকের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, ‘আমরা এখন সালিশ ও মামলা উভয় প্রক্রিয়াতেই কাজ করছি। আরসিবিসিও সালিশের মাধ্যমে এটি সমাধান করতে চায়।

আমরা ইতোমধ্যেই আরসিবিসির সঙ্গে সিঙ্গাপুরে বৈঠক করেছি। আমাদের মামলা যুক্তরাষ্ট্রের আদালতেও চলমান। আমাদের আইনজীবীর মতে বাংলাদেশের পক্ষেই রায় আসবে। এছাড়া সালিশ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে অর্থ দ্রুত ফেরত আসবে বলে আমরা আশাবাদী।

প্রক্রিয়াটির সঙ্গে সম্পৃক্ত ওই কর্মকর্তা বাসসকে বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংক আরসিবিসির কাছে মূল অর্থের পাশাপাশি সুদ ও আইনি খরচসহ একটি উল্লেখযোগ্য পরিমাণ অর্থ দাবি করেছে।

২০১৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে সংঘটিত বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ চুরির ঘটনাটি ছিল একটি সাইবার হামলা। যেখানে হ্যাকাররা সুইফট সিস্টেম ব্যবহার করে প্রতারণামূলকভাবে নিউইয়র্ক ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংকে বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের অ্যাকাউন্টে থাকা প্রায় ১ বিলিয়ন মার্কিন ডলার চুরির চেষ্টা করে।

২০১৬ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি হ্যাকাররা ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক অব নিউইয়র্কে বাংলাদেশ ব্যাংকের অ্যাকাউন্ট থেকে ১০১ মিলিয়ন মার্কিন ডলার চুরি করে। এর মধ্যে, ৮১ মিলিয়ন ডলার ম্যানিলার আরসিবিসির চারটি অ্যাকাউন্টে এবং বাকি ২০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার শ্রীলঙ্কার একটি ব্যাংকে স্থানান্তরিত হয়।

তবে, হ্যাকারদের বানান ভুলের কারণে শ্রীলঙ্কায় ২০ মিলিয়ন ডলার স্থানান্তরের চেষ্টা ব্যর্থ হয়। পরে বাংলাদেশ ব্যাংক শ্রীলঙ্কা থেকে ওই অর্থ ফেরত পায়।

পরবর্তীতে, কর্তব্যে অবহেলার জন্য ফিলিপাইন আরসিবিসির কাছ থেকে যে জরিমানা আদায় করে, সেই অর্থ থেকে বাংলাদেশ ব্যাংক প্রায় ১৫ মিলিয়ন ডলার পুনরুদ্ধার করতে সক্ষম হয়। এখনও প্রায় ৬৬ মিলিয়ন ডলার পুনরুদ্ধার করা সম্ভব হয়নি।

একাধিক অভিযোগের ভিত্তিতে বাংলাদেশ ব্যাংক ২০২০ সালে আরসিবিসির বিরুদ্ধে নিউইয়র্ক সুপ্রিম কোর্টে একটি মামলা দায়ের করে। ২০২৪ সালের ২৯ ফেব্রুয়ারি সেই মামলায় থাকা তিনটি অভিযোগ খারিজ হয়ে যায়। একই বছরের জুন মাসে নিউইয়র্ক কোর্ট অব আপিলস মামলাটি অন্য আদালতে স্থানান্তরের জন্য আরসিবিসির আবেদন প্রত্যাখ্যান করে।

সম্প্রতি ঢাকার একটি সিনিয়র স্পেশাল জজ আদালত বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ চুরির মামলার সঙ্গে সম্পর্কিত ৮১ মিলিয়ন মার্কিন ডলার বাজেয়াপ্ত করার আদেশ দিয়েছেন। আদালতের এই নির্দেশনা ফিলিপাইন-ভিত্তিক আরসিবিসিকে লক্ষ্য করে দেওয়া হয়েছে, যারা চুরি যাওয়া অর্থ পাচারে জড়িত ছিল।

সিআইডি প্রধান মো. ছিবগাত উল্লাহ সম্প্রতি ঢাকায় এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘চুরির নয় বছর পর এ বছরের ১৮ সেপ্টেম্বর আদালত আরসিবিসিতে থাকা অর্থ বাজেয়াপ্ত করার এই আদেশ দেন।’

তিনি জানান, আদালতের আদেশের একটি কপি ফিলিপাইনে আরসিবিসির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের কাছে পাঠানো হয়েছে।

সিআইডির আবেদনের ভিত্তিতে মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০১২-এর ধারা ১৭(২) (৭) অনুসারে ঢাকার সিনিয়র স্পেশাল জজ আদালত এই আদেশ দেন।

ছিবগাত উল্লাহ বলেন, তদন্তে নিশ্চিত হওয়া গেছে যে, আরসিবিসির তৎকালীন প্রেসিডেন্ট ও সিইও লরেঞ্জো টান, মাকাতি সিটির আরসিবিসির জুপিটার ব্রাঞ্চ ম্যানেজার মায়া সান্তোস দেগুইতো এবং আরসিবিসির প্রধান কার্যালয় ও জুপিটার ব্রাঞ্চের অন্যান্য কর্মকর্তারা ভুয়া অ্যাকাউন্ট খুলে চুরি হওয়া অর্থ পাচারে জড়িত ছিল।

তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষ থেকে পেমেন্ট বন্ধ করার জন্য বার্তা পাঠানো সত্ত্বেও এই কর্মকর্তারা বেআইনিভাবে চুরি করা অর্থ বিতরণ করে দেন।

তিনি বলেন, ‘ফিলিপাইনের আদালত ইতোমধ্যেই আরসিবিসির কর্মকর্তাদের দোষী সাব্যস্ত করেছে এবং ফিলিপাইনের কেন্দ্রীয় ব্যাংক ব্যাংকটির উপর বড় অঙ্কের জরিমানা আরোপ করেছে। ২০১৬ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি আরসিবিসি বাংলাদেশ ব্যাংককে মাত্র ৬৮ হাজার ডলার ফেরত দিয়েছিল। যা ছিল চুরি যাওয়া অর্থ ফেরতের প্রথম ধাপ।’

তিনি বলেন, প্রমাণের ভিত্তিতে সিআইডির তদন্তে এটি নিশ্চিত হওয়া গেছে, আরসিবিসি একটি কর্পোরেট সত্তা হিসাবে মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইনের ধারা ২৭ অনুযায়ী অর্থ পাচারে অপরাধী।

সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার (মিডিয়া) জসিম উদ্দিন খান বাসসকে বলেন, ঢাকার আদালত এই আদেশ দিয়েছেন এবং অর্থ পুনরুদ্ধারে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে।

 


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category

ফেসবুকে আমরা