বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে মুক্তি দিয়ে চিকিৎসার জন্য বিদেশ পাঠাতে সরকারের তরফ থেকে যে আইনি বাধার কথা বলা হচ্ছে, সেই আইনের মাধ্যমেই সরকার তাঁকে বিদেশে পাঠাতে পারে বলে পুনরায় মন্তব্য করেছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
আজ মঙ্গলবার বিকেলে রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে খালেদা জিয়ার মুক্তি ও সুচিকিৎসার জন্য তাঁকে বিদেশে পাঠানোর দাবিতে জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের কেন্দ্রীয় কমিটি আয়োজিত প্রতিবাদ সভায় তিনি এ মন্তব্য করেন। মির্জা ফখরুল বলেন, চিকিৎসকেরা বলেছেন, খালেদা জিয়া জীবন–মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে রয়েছেন। তারা (সরকার) আইন দেখাচ্ছে। যে আইন দেখাচ্ছে, সেই ৪০১ ধারায় পরিষ্কারভাবে বলা আছে, সরকারই পারে তাঁকে চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠাতে। সভায় উপস্থিত আইনজীবীরা আইন কোনো বাধা নয়, বাধা হচ্ছে সরকার, যারা জনগনের দ্বারা নির্বাচিত নয়, যারা জনগনের সঙ্গে প্রতারণা করে ভুল বুঝিয়ে জোর করে ক্ষমতা দখল করে আছে। বিএনপি মহাসচিব বলেন, খালেদা জিয়ার মামলা সাজানো মামলা। কোনোভাবেই তাঁকে সাজা দেওয়া যায় না। শুধুমাত্র রাজনৈতিক কারণে, প্রতিহিংসার কারণে তাঁকে সাজা দিয়ে আটক করে রাখা হয়েছে। মির্জা ফখরুল বলেন, আজকে কারও গণতান্ত্রিক অধিকার নেই, বাক্স্বাধীনতা নেই। আজকে আইনের শাসন তিরোহিত। দুঃখের ব্যাপার হচ্ছে বিচারব্যবস্থাকে সম্পূর্ণ দলীয়করণ করার চেষ্টা করা হচ্ছে। আইন-আদালতকে হাতের মধ্যে নিয়ে বিচারব্যবস্থাকে দলীয়করণ করে গণতন্ত্রকে ধ্বংস করা হয়েছে। মির্জা ফখরুল আরও বলেন, ‘আমরা ভুলে যাইনি, যে নির্বাচনব্যবস্থাকে এই দেশের মানুষ গ্রহণ করে নিয়েছিল, সেই তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বিধানকে বাতিল করেছে এই আওয়ামী লীগ, যাতে তারা দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের ব্যবস্থা রেখে বশংগত নির্বাচন কমিশনের মাধ্যমে ভুয়া নির্বাচনের মধ্য দিয়ে বারবার ফিরে আসতে পারে। খালেদা জিয়ার প্রতি এত রাগ কেন তাদের? কারণ, তারা জানে, খালেদা জিয়া হচ্ছেন সেই বাঁশিবাদক, হ্যামিলিয়নের বাঁশিওয়ালার মতো যিনি বেরিয়ে এলে, গণতন্ত্রের সংগ্রামের জন্য ডাক দিলে—লাখ লাখ মানুষ রাস্তায় বেরিয়ে আসবে। সে জন্যই তাঁকে আটকে রাখা হয়েছে।’ জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের সদস্যসচিব ফজলুর রহমানের সভাপতিত্বে প্রতিবাদ সভায় আরও বক্তব্য দেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শাহজাহান ওমর, আহমেদ আজম, সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি জয়নুল আবেদীন, সাবেক সাংসদ নিতাই রায় চৌধুরী, সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সম্পাদক রুহুল কুদ্দুস, সাবেক সম্পাদক এ এম মাহবুব উদ্দিন, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা তৈমুর আলম খন্দকার প্রমুখ। প্রতিবাদ সভা শেষে আগামী রোববার সারা দেশের সব বারে (আইনজীবী সমিতি) বিএনপিপন্থী আইনজীবীরা অনশন কর্মসূচি পালন করবেন বলে জানানো হয়।