ঠাকুরগাঁও জেলা প্রতিনিধিঃ
ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার রুহিয়া থানার ২১ নং ঢোলারহাট ইউনিয়নের টাঙ্গন নদীর বুক চিড়ে গঠন করা হয় ৯ নম্বর ওয়ার্ড। এই ওয়ার্ড থেকে পশ্চিমে ১:৫ কিলোমিটার ঢোলারহাট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, পূর্ব পাশে ১ কিলোমিটারের বেশি বড়দেশ্বী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে, উত্তরে পাশে ১:৫ কিলোমিটার দূরত্বে সন্যাসী পাড়া ধর্মপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কিন্তু ৯ নং ওয়ার্ডে কোন প্রাথমিক বিদ্যালয় না থাকায় বেকায়দায় পড়েছে এই ওয়ার্ডের প্রাথমিকের শত শত শিক্ষার্থী। বর্তমানে পুরো ওয়ার্ডে স্কুল না থাকার কারণে তিন পার্শে প্রায় ২ কিলোমিটার বিদ্যালয়ে যেতে শিক্ষার্থীদের অনীহা তৈরি হচ্ছে। পাশাপাশি অভিভাবকরা শিশুদের দূরের স্কুলে পাঠাতে অনীহা প্রকাশ করেন। বর্তমানে ওয়ার্ডটিতে কোনো বিদ্যালয় না থাকায় সন্তানদের নিয়ে দুশ্চিন্তায় রয়েছেন অভিভাবকরা। আবার নির্বাচনের সময় ভোট গ্রহণের সমস্যা সৃষ্টি হয়। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ২১ নং ঢোলারহাট ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডটি ঘনবসতিপূর্ণ এলাকা। ওয়ার্ডটিতে পাঁচ থেকে ১২ বছর বয়সের তিন শতাধিক শিশু থাকলেও নেই কোনো সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। ফলে দূরের বিদ্যালয়গুলোতে যেতে চায় না শিশুরা। এতে প্রতিনিয়ত এলাকাটিতে বাড়ছে ঝরে পড়া শিক্ষার্থীর সংখ্যা। প্রতি ওয়ার্ডে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় নীতিমালার আলোকে এই ওয়ার্ডটিতেও একটি বিদ্যালয় স্থাপনের দাবি জানিয়েছেন স্থানীয়রা। সরেজমিন দেখা যায়, ইউনিয়নের ছুট খড়ি বাড়ি, কলাবাগান, দিনু পাড়া, মহাদেব মহুরি পাড়া , ডাঙ্গা পাড়া, গড়ের পাড় নিয়ে ৯ নং ওয়ার্ড নিয়ে গঠিত। ওয়ার্ডটিতে মোট জনসংখ্যা প্রায় সাড়ে তিন হাজার,ভোটার সংখ্যা প্রায় দেড় হাজার। এ ব্যাপারে জানতে চাইলে ছুট খড়ি বাড়ি এলাকার দোকানদার মোঃ মালেক হোসেন জানান, এই ওয়ার্ডে সরকারি-বেসরকারি মিলে ৩০ জন শিক্ষক বসবাস করেন। অথচ এখানে কোনো প্রাথমিক বিদ্যালয় নেই। কলাবাগান এলাকার বাসিন্দা হবিরর, মহাদেব মহুরি পাড়ার বাসিন্দা খগেশ্বর বর্মন মাস্টার জানান আমাদের ৯ নং ওয়ার্ডেস্কুল না থাকায় শিশুদের ঝুঁকি নিয়ে অন্য ওয়ার্ডের স্কুলে পাঠাতে হয়। ফলে অভিভাবকরা তাদের সন্তানদের স্কুলে পাঠাতে অনীহা প্রকাশ করেন। স্কুল নির্মাণের কোন প্রচেষ্টা না থাকার কারণে স্কুল করা যায়নি। তবে এই ওয়ার্ডে স্কুল প্রতিষ্ঠা করার মতো সরকারি খাসজমি রয়েছে। এ ব্যাপারে সরকার উদ্যোগ নিলেই স্কুল প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব। ৯ নং ওয়ার্ড বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রহিম জানান, ইউনিয়ন প্রতিষ্ঠার পর থেকে ৯ নং ওয়ার্ডটি বৈষম্যের শিকার তিনি বলেন কোন কোন ওয়ার্ডে একাধিক স্কুল থাকলেও আমাদের ওয়ার্ডে নেই কোন স্কুল। তিনি আরও বলেন ৯ নং ওয়ার্ডে কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান না থাকার কারণে নির্বাচনের সময় ভোট গ্রহণে সমস্যার সৃষ্টি হচ্ছে। কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নেই এজন্যই ওয়ার্ডের শেষ প্রান্তে একটা মালিকানাধীন স্কুলে ভোট গ্রহণ করা হয়। তিনি এই ওয়ার্ডে একটি স্কুল নির্মাণের জোর দাবি করেন। ২১ নং ঢোলারহাট ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক জিল্লুর রহমান জুয়েল বলেন ২০১২ সালে ২১ নং ঢোলারহাট ইউনিয়ন পরিষদ গঠিত হয়, ইউনিয়নের প্রতি টা ওয়ার্ডে প্রাথমিক বিদ্যালয় থাকলেও ৯ নং ওয়ার্ডে কোন প্রাথমিক বিদ্যালয় নেই। তিনি আরও বলেন আমি এই ওয়ার্ডে একটা প্রাথমিক বিদ্যালয় নির্মাণের দাবি জানাচ্ছি ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার এরশাদুল ইসলাম বলেন, তিনি এই উপজেলায় কিছু দিন আগে যোগদান করেছেন। তবে প্রতিটি ওয়ার্ডে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থাকা প্রয়োজন। আমি এ বিষয় ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করব তারপর স্কুল নির্মাণের ব্যবস্থা গ্রহণ করব। ঠাকুরগাঁও জেলা শিক্ষা অফিসার মোফাজ্জল হোসেন বলেন বর্তমানে প্রতিটা এলাকায় প্রচুর স্কুল রয়েছে কিন্তু ঢোলারহাট ইউনিয়নের ৯ নং ওয়ার্ডে কোন প্রাথমিক বিদ্যালয় নেই এ বিষয় আমার জানা নেই তবে আমি খোঁজ খবর নিয়ে দেখব।যদি এমন হয় যে এই ওয়ার্ডে কোন স্কুল নেই তাহলে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবগত করব।